মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী দুপুরে সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরসহ চারজনকে ইঙ্গিত করে তাদের ‘ডাকাত’ আখ্যায়িত করেছিলেন। দিনশেষে রাতে আবার মেয়র নাছিরের বাসায় গিয়ে বৈঠক করলেন তিনি।
বিষয়টি চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে প্রথমবারের মতো এ বৈঠককে ঘিরে নগরীর রাজনৈতিক অঙ্গনে সুবাতাস বইতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আর বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির বলেন, ‘রাজনৈতিক অঙ্গনে মতবিরোধ থাকতেই পারে। এটা দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। কিন্তু দলীয় আদর্শে মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে আমি এক ও অভিন্ন। এ নিয়ে হতভম্ব হওয়ার কিছুই নেই।’
বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নতুন সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সাংগঠনিক পদে ঠাঁই পাওয়া চট্টগ্রামের সন্তানদের সংবর্ধনা দেয়ার বিষয়ে আরোচনার জন্য বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় আমার বাসায় বৈঠক হয়। প্রায় এক ঘণ্টা চলে এ বৈঠক।’  ১২ নভেম্বর নগরীর লালদিঘী ময়দানে এ সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মেয়র বলেন, ‘সিটি মেয়র হওয়ার পর থেকে সাংগঠনিক বৈঠকে প্রথমবারের মতো মহিউদ্দিন চৌধুরী ভাইকে পেয়ে ভালো লাগছে। সংবর্ধনা সভা সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। দুপুরে ডাকাত ডাকা প্রসঙ্গও আলোচনায় এসেছে।’ তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে অনীহা প্রকাশ করেন মেয়র নাছির উদ্দিন।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আলম চৌধুরী, সাধারণ স¤পাদক চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এম এ সালাম এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ স¤পাদক মফিজুর রহমান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ জানান, বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের শ্রমিক সমাবেশে এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, বন্দর মাফিয়াচক্রের কবলে পড়েছে। চার ডাকাত গিলে খাচ্ছে বন্দর। এর মধ্যে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ এম এ লতিফ এবং বর্তমান সিটি মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনকে ইঙ্গিত করা হয়। তবে এ ধরনের বক্তব্যকে তেমন কেউ একটা গায়ে মাখে না।
মোছলেম উদ্দিন বলেন, এম এ লতিফ এমপি ও আ জ ম নাছিরের সঙ্গে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মতবিরোধ দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে উভয়পক্ষ একে-অপরের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে মাঠ গরম করে ঠিকই। কিন্তু আদর্শগত কোনো অমিল বা ভিন্নতা নেই তাদের মধ্যে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নাছির উদ্দিন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সাংগঠনিক কোনো বৈঠকে ছিলেন না মহিউদ্দিন চৌধুরী। অবশ্য এর মধ্যে বেশির ভাগ সময় অসুস্থ ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের এই সভাপতি। দীর্ঘদিন পর প্রথমবারের মতো বৈঠক হওয়ায় গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। রাত ১১টার দিকে বৈঠক শেষ হওয়া পর্যন্ত সেখানে ছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী।
আজ বৃহস্পতিবার সকালেও এ ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বৈঠক ছিল সংবর্ধনা সভা নিয়ে। এটি সাংগঠনিক কাজ। আমি তো সংগঠন থেকে দূরে নই।’ ডাকাত ডাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে যান।
Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031