এ সপ্তাহের মাঝামাঝি রাশিয়ার তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকা ‘স্পুটনিক-৫’ ভারতে হিউম্যান ট্রায়াল বা মানুষের ওপর পরীক্ষা শুরু হচ্ছে । ভারত সরকারের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন হিন্দুস্তান টাইমস। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মানুষের ওপর এই টিকার পরীক্ষা শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি ও অনুমোদন সম্পন্ন হয়েছে। এক্ষেত্রে বিশেষ করে বাধ্যতামুলক রেগুলেটরি অনুমোদন। তাও নেয়া হয়েছে। ফলে এ সপ্তাহেই এই টিকার পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ভারতে। ওদিকে গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছেন ভারতের নীতি আয়োগ স্বাস্থ্য বিষয়ক সদস্য ড. ভিকে পাল। তিনি বলেছেন, এতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা করা হবে।

এ জন্য আমরা ড্রাগ রেগুলেটরদের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েছি।
উল্লেখ্য, সারা বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাস মহামারিতে হাবুডুবু খাচ্ছে, করোনার টিকা নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে, তখন একেবারে সবার আগেই রাশিয়া ঘোষণা দেয় তাদের উৎপাদিত টিকা ‘স্পুটনিক-৫’ পরীক্ষায় সফল প্রমাণিত হয়েছে। ফলে এই টিকা সবার মাঝে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এমনকি এই টিকা দেয়া হয়েছে প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের মেয়েকে পর্যন্ত। তবে যথাযথ পরীক্ষা ছাড়াই এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সারাবিশ্বের বিজ্ঞানী ও অভিজ্ঞরা সংশয় প্রকাশ করেছেন। তারা একে দেখেছেন রাশিয়ার রাজনীতি হিসেবে। কারণ, রাশিয়া ঘোষণা দিয়েছিল মহাকাশ যুগে তারা যেমন সবার আগে মহাশূন্যে স্পুটনিক পাঠিয়ে বিস্ময় স্মৃতি করেছিল, ঠিক এক্ষেত্রেও তারা স্পুটনিক-৫ আবিষ্কার করে বিশ্বের মধ্যে করোনা টিকার ক্ষেত্রে এক নম্বর। তবে এই টিকা যে কতটা কার্যকর তা বিশ্বমঞ্চে এখনও প্রমাণিত নয়। কারণ, এখনও তাদের টিকার পরীক্ষা চলছে। তার অংশ হিসেবে ভারতে তাদের টিকা পরীক্ষা করা হবে।
মস্কোভিত্তিক গ্যামালেয়া ইনস্টিটিউট তৈরি করেছে স্পুটনিক-৫। রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আরডিআইএফ) এরই মধ্যে ভারতের বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ড. রেড্ডিস ল্যাবরেটরিজের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ডা. রেড্ডিস ল্যাবরেটরিজ কোম্পানির প্রধান কার্যালয় হায়দরাবাদে। আরডিআইএফের সঙ্গে এই কোম্পানির চুক্তি হয়েছে, স্পুটনিক-৫ এর পরীক্ষা এবং ভারতে তা বিতরণে। এ জন্য ড. রেড্ডিস ল্যাবরেটরিকে এক কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করবে আরডিআইএফ। একই সঙ্গে রাশিয়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে তাদের টিকার নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিয়েছে। এক্ষেত্রে ইমার্জেন্সি ইউজ লিস্টিং (ইএইএল) এবং টিকার প্রিকোয়ালিফিকেশন সম্পর্কে নিবন্ধন চাওয়া হয়েছে। তবে যেসব টিকা বা ওষুধ গুণগতমান, নিরাপত্তা ও কার্যকারিতায় সারাবিশ্বের জন্য উপযোগী তাদেরকেই প্রিকোয়ালিফিকেশন অব মেডিসিন প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ভারতে চারটি টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা চলছে। অন্য একটি টিকার পরীক্ষা চলছে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা। অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকা টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্সের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে পরীক্ষা করছে পুনেভিত্তিক সেরাম ইনস্টিট্উিট অব ইন্ডিয়া। কোভ্যাক্সিন, দ্য ভারত বায়োটেক এবং আইসিএমআর এর টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষাও চলছে। অন্যদিকে ক্যাডিলা হেলথকেয়ারের জাইকোভডি নামে আরেকটি টিকার দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা চলছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031