বাংলাদেশ ব্যাংকেরই ১০ কর্মকর্তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলায় আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে চলেছেন । তদন্তের ৭০ শতাংশ শেষে এমনটিই জানা যায়।

ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং, আইটি, পেমেন্ট সিস্টেম, ফরেন রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্টের কর্মকর্তারা এই রিজার্ভ চুরির সঙ্গে জড়িত। তবে এই ১০ কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটা চুরি নাকি নিতান্তই অদক্ষতার পরিচয় সেটা স্পষ্ট নয়। আইটি নিরাপত্তায় অদক্ষতা, গাফিলতি, অবহেলার প্রমাণ এর আগেই মিলেছে। বিচারে উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

জানা যায়, সুইফট সার্ভারের তিন কর্মকর্তাও এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তাদের সহায়তা ছাড়া হ্যাক করে ডলার পাচার সম্ভব ছিল না।

তদন্তের আওতায় রয়েছেন ফিলিপাইনের আরসিবিসি, মানি লন্ডারিং প্রতিষ্ঠান ফিলরেম, ইস্টার্ন হাওয়াই লেইসার ক্যাসিনো, ব্লুমবেরি হোটেল, শ্রীলঙ্কার সালিকা ফাউন্ডেশন।রিজার্ভ চুরিতে মোট ৭০টা পেমেন্ট অর্ডার দেয়া হয়েছিল। প্রথম অর্ডারটা যায় শ্রীলঙ্কায়।

হ্যাকার, মানি লন্ডার, নেগোশিয়েটর ইনসাইডার এই তিন ভাগে তদন্ত চলছে। ইনসাইডার তারাই যারা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরে বসে হ্যাকারদের সার্ভারে ঢোকার সুযোগ করে দিয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তা ছাড়া এটি সম্ভব ছিল না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আট তলার বিশেষ ঘর থেকে সুইফটের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়। ব্যাংকের আট কর্মকর্তার কাছে সুইফট আইডি থাকে। তারাই শুধু সুইফট সার্ভার ব্যবহার করতে পারে। লোকাল সার্ভার, সুইফটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা ব্যাংক থেকেই হ্যাকারদের জানান হয়েছিল। সুইফট স্মার্টকার্ড কোনো ভাবেই ভল্টের বাইরে রাখা যায় না। অথচ পেমেন্টের পরেও সেটা বাইরে ছিল। সুইফট সার্ভার, লোকাল ইন্টারনেটের সঙ্গে যারা যুক্ত করেছে তারাই মূল আসামি। এক বছর আগে সব বেসরকারি ব্যাংক সুইফট নেটওয়ার্কের সঙ্গে রিয়েল টাইম গ্রোস সিস্টেম বা আর টিজিএস ব্যবহারের সুযোগ পায়। মাত্র তিনটি ব্যাংক ৪ ফেব্রুয়ারি সেটা ব্যবহার করেছিল। ওই দিনই চুরির ঘটনা ঘটে।

বিদেশি অপরাধী তালিকায় জাপানের সাসাকিম তাকাশি, জয়দেবা। আরসিবিসি-র জুপিটার শাখার মায়া সান্টোস দেগুইতো ফিলিপাইনের ক্যাসিনো ইস্টার্ন হওয়াই লেইসার কোম্পানির মালিক কিম অং, ফিলরিমের প্রেসিডেন্ট স্নুইড বাতিস্তা, ফিলিপিন্সের বণিক উইলিয়াম গো সোসালিকা ফাউন্ডেশনের ছয় পরিচালক গামাজ সালিতা পেরেরা, সানজেবা টিসা বান্দারা, শিরানি ধার্মিকা ফানান্দো, ডন প্রসাদ রোহিতা, নিশান্থা নালাকা, ওয়ালাকুরুয়ারাচ্চি। যথার্থ প্রমাণ মেলাতেই চার্জশিটে তাদের নাম থাকবে। তদন্তের শেষ পর্যায়ে অপরাধীর তালিকা আরো দীর্ঘ হতে পারে। কেউ যাতে পার না পায় সেজন্য সতর্ক বাংলাদেশের নিরাপত্তা দপ্তর।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031