শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া নতুন পাঠ্যবইয়ে অমার্জনীয় ‘ভুলভ্রান্তি’ স্বীকার করে এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে শাস্তির আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, দায়ী ব্যক্তিরা কেউ রেহাই পাবে না। গতকাল সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। মন্ত্রী বলেন, ছোট ছোট ছাপার ভুলের কারণে হতে পারে। কিন্তু বড় বড় ভুল যেমন: কাভার পেইজে বড় অক্ষরে ছাপার শব্দে বানান ভুল, কবিতা বিকৃতি। যাদের জন্য এই ভুল তাদের কেউ রেহাই পাওয়ার যোগ্য নয়। তিনি বলেন, বড় ভুলগুলো কীভাবে সংশোধন করা যায়, তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনের আলোকে দুজনকে চিহ্নিত করে ওএসডি করা হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেলে জড়িত সবাইকে পরিপূর্ণ শাস্তি দেয়া হবে। ভুলত্রুটি আর ব্যর্থতা যাই হোক; বছরের প্রথম দিন বই বিতরণকে বিশাল ‘কর্মযজ্ঞ’ উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ বলেন, আমি এরকম (ভুল) আশা করিনি। এখানে পরিপূর্ণ সকল বিষয়ে আলাপ করব না, সেটা সম্ভবও না। আপনারা (সাংবাদিক) প্রশ্ন না করলেই খুশি হব। অনেক ভুলত্রুটি হয়েছে, সীমাবদ্ধতা আছে, ত্রুটি থাকতেই পারে। ভুলগুলো শিক্ষক ঠিক করে দেবেন, যারা দায়ী তারা ঠিক করে দেবেন। এগুলো না করে যদি ঠিক উল্টোটা করতে থাকি, তাহলে ছেলেমেয়েরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি বা প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছি, ভুলের জন্য আমাদের বিচার হওয়া উচিত, সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু ছেলেমেয়েদেরকে উৎসাহিত করার নৈতিক দায়িত্ব আমাদের সকলের। যেটা তাদের উপর নেগেটিভ প্রভাব ফেলে আমি মনে করি সেটা করা উচিত না।
সব ভুলই সংশোধনযোগ্য মনে করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, কিছু ভুল থাকতে পারে ছাপার ভুুল, যেগুলো সংশোধনী দিয়ে সবাইকে জানিয়ে দেয়া হবে। কিছু ভুল থাকতে পারে বড় ধরনের, যেটা সংশোধন করতে গেলে ওই জায়গাটা ‘রিপ্লেস’ করতে পারি। কিছু ভুল থাকতে পারে যেগুলো থাকা উচিত ছিল না, সেগুলো ‘অমিট’ করার জন্য সরকারের নির্দেশ পাঠিয়ে দেব, ওই পাতাগুলো আমরা ছিঁড়ে নেব বা ‘ব্ল্যাক’ করে দেব- এভাবে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেব। সব ভুলই সংশোধনযোগ্য।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তদন্ত কমিটি হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন হাতে পাওয়া পর ভুল সংশোধনসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নাহিদ বলেন, পাণ্ডুলিপি তৈরির পর তা সম্পাদনা ও মানোন্নয়ন এনসিটিবির দায়িত্ব। বিশেষজ্ঞ শিক্ষকরা এর সঙ্গে জড়িত থাকেন। এনসিটিবির প্রধান সম্পাদক চূড়ান্তভাবে সই না করলে বই ছাপা হয় না। এ ছাড়াও এডিবি ও বিশ্ব ব্যাংকের কিছু শর্তের কারণে প্রাথমিকের বই ছাপাখানায় পাঠাতে দেরি হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অল্প সময়ে অতি দ্রুত বইগুলো সম্পাদনার কাজটি শেষ করা হয়েছে।
ছাগলের যে ছবি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে তা সংশোধন করা হবে জানান নাহিদ। ‘ও-তে ওড়না’ নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, নানা মত থাকতে পারে, আমরা সবগুলো মতামত ওয়েলকাম করি। কিছু ভুল পেয়েছি, যা হওয়া উচিত না। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমদ, অরুণা বিশ্বাস ও রুহী রহমান প্রমুখ।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031