চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রতি অর্থবছরে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ১৯৩ জন কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয় । টেন্ডারের (দরপত্র) মাধ্যমে ৪র্থ শ্রেণির এ সব কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পাদনের নিয়ম রয়েছে। প্রতিবার টেন্ডারের মাধ্যমে এক বছরের জন্য (জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত) এ সব কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। সে হিসেবে প্রতি অর্থবছরের শুরুতে (জুনে) ১৯৩ জন কর্মচারী নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যথারীতি এবারও দরপত্র আহ্বান করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৬টি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেয়। তবে যাচাই-বাছাই ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় একটি প্রতিষ্ঠানও যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়নি। ৬ সদস্যের কমিটি দরপত্র যাচাই-বাছাই ও মূল্যায়ন কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুর সাত্তার এ কমিটির সভাপতি। আর হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. অংসুই প্রু মারমা কমিটির সদস্য সচিব। অন্যান্যের মধ্যে সিনিয়র স্টোর অফিসার, গণপূর্তের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, সিভিল সার্জন/প্রতিনিধি ও হাসপাতালের সমাজসেবা অফিসার এ কমিটির সদস্য। মূল্যায়ন কমিটি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অংশ নেয়া সবকয়টি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। যার দরুন কোনো প্রতিষ্ঠানকে যোগ্য হিসেবে তারা সুপারিশ করতে পারেননি। আর ‘যোগ্য প্রতিষ্ঠান’ না পাওয়ায় এ সব কর্মচারী নিয়োগে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করেছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ গত ২৩ অক্টোবর ২য় দফায় এ দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহ্বানের তথ্য নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান  বলেন, প্রথম দফায় অংশ নেয়া কোনো প্রতিষ্ঠান দরপত্রের শর্ত পূরণ করতে পারেনি মর্মে মূল্যায়ন কমিটি প্রতিবেদন দেয়। যার কারণে পুনরায় আমাদের টেন্ডার আহ্বান প্রক্রিয়ায় হাঁটতে হয়েছে। আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত দরপত্রের সিডিউল ক্রয় করা যাবে বলেও জানান তিনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জনবল সরবরাহে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অবশ্যই শ্রম অধিদপ্তরের হালনাগাদ (নবায়নকৃত) লাইসেন্স থাকতে হবে মর্মে দরপত্রের শর্তে উল্লেখ করা হয়। দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়া কোনো প্রতিষ্ঠানেরই শ্রম অধিদপ্তরের হালনাগাদ লাইসেন্স ছিল না বলে জানিয়েছেন মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. আব্দুর সাত্তার। মূলত দরপত্রের মৌলিক এ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কমিটি সুপারিশ করতে পারেনি জানিয়ে ডা. আব্দুর সাত্তার বলেন, এর প্রেক্ষিতে কমিটির পক্ষ থেকে পুণরায় দরপত্র আহ্বানের মতামত দেয়া হয়।

বাতিল হওয়া দরপত্রে শাপলা এন্টারপ্রাইজ, আরব সিকিউরিটিজ, সেলিম এন্ড ব্রাদার্স ও গাউসিয়া ট্রেডার্সসহ ৬টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আউটসোর্সিংয়ে এক বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়া এ সব কর্মচারী মাসিক ১৬ হাজার ৬২০ টাকা হারে বেতন পান। কর্মচারীদের ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমেই এ বেতন পরিশোধের নিয়ম রয়েছে।

যদিও নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মচারীদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণের বিস্তর অভিযোগ জনবল সরবরাহে দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। কর্মচারীদের অভিযোগ- নিয়োগের ক্ষেত্রে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টাকা থেকে লাখ টাকা দিতে হয়। অগ্রিম হিসেবে এই টাকা না দিলে নিয়োগ পাওয়া যায় না। নিয়োগ পরবর্তী কর্মচারীদের মাসিক নির্ধারিত বেতনের একটি অংশও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিয়ে নেয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031