আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিদেশি সব দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূতদের নিরাপত্তায় কোনো শিথিলতা দেখানো হবে না বলে জানিয়েছেন। বাংলাদেশে ছয় দেশের মিশন প্রধানকে দেওয়া বাড়তি নিরাপত্তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে কয়েকদিন ধরে আলোচনার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার সরকারি দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে এই বক্তব্য এলো।

দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে কাদের বলেন, বিএনপির আমলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত বাংলাদেশে আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বিএনপির শাসনামলে তাদের সৃষ্ট জঙ্গিবাদী শক্তির হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর কূটনীতিকদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এটা কোনো স্থায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। কূটনীতিকদের আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, বিদেশি যে সকল দূতাবাস এবং রাষ্ট্রদূতরা বাংলাদেশে আছেন তাদের সকল নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার কোনো প্রকার শিথিলতা প্রদর্শন করবে না।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতসহ ছয় দেশের মিশন প্রধানের চলাচলের ক্ষেত্রে বাড়তি নিরাপত্তা সুবিধা (পুলিশ এসকর্ট) দিয়ে আসছিল বাংলাদেশ সরকার। হর্লি আটিজানে হামলার পর থেকে এই বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা পেয়ে আসছিলেন তারা। হঠাৎ বাড়তি এই নিরাপত্তা প্রত্যাহারের পর আলোচনার মধ্যেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।

এমনকি কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য নজরে আসার কথা জানিয়ে সোমবার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষেও একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়। তাতে বলা হয়, প্রতিটি দূতাবাসেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা বিধান অব্যাহত রেখেছে এবং রাষ্ট্রদূতদের পুলিশের দেওয়া গানম্যানও নিয়োজিত রয়েছে। নিরাপত্তা প্রত্যাহার সম্পর্কিত এই বিভ্রান্তিকর খবরটি সঠিক নয়। এর দুদিন পর বিবৃতি দিয়ে কূটনীতিকদের আন্তর্জাতিক নিয়মে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়টি স্পষ্ট করলেন সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক।

এতে সম্প্রতি দেওয়া বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কাদের আরও বলেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অসাংবিধানিক উপায়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে ধ্বংস করেছিল। সামরিক স্বৈরাচারের বুটের তলায় পিষ্ট হয়েছিল এদেশের মানুষের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। বিএনপি নেতৃবৃন্দের অসাড়, অর্বাচীন ও গণচেতনাবিচ্ছিন্ন বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যগতভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, তথাকথিত আন্দোলন হালে পানি না পাওয়ায় তাদের নেতৃবৃন্দ প্রতিদিন চিরাচরিত একঘেয়ে বক্তব্য রেখেই যাচ্ছে। তারা শুধু সমালোচনার নামে সরকারের সমালোচনা করে। জনগণের ভাগ্যোন্নোয়নে শেখ হাসিনার গৃহীত উন্নয়ন নীতির কারণে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার বিপরীতে বিএনপির হাতিয়ার হল ষড়যন্ত্র, মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও উস্কানিমূলক বক্তব্য। বিএনপির লক্ষ্য যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা দখল, বিপরীতে আওয়ামী লীগের পথচলার শক্তি শুধু জনগণ। যে আন্দোলনে জনগণের সম্পৃক্ততা নেই, যে আন্দোলন শুধুমাত্র ক্ষমতার মোহ থেকে পরিচালিত হয়, সে আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানের কথা হাস্যকর।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031