আদালত জামায়াতের অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের দুর্ধর্ষ ক্যাডার হিসেবে পরিচিত নাছির উদ্দিনকে ৫ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন । পুলিশের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তিন ধারায় আজ বুধবার বিকেলে এ রায় দেন চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম শফিউদ্দিন। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পিপি রায়হাদ চৌধুরী রনি বলেন, পুলিশের কাজে বাধাদান, হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারায় তিন মাস কারাদন্ড ও ৫০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাভোগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারায় তিন বছরের সাজা ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাভোগ এবং ৩৩২ ধারায় অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় দুই বছরের সাজা ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাভোগের নির্দেশ দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় শিবির ক্যাডার নাছিরকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায়ের পর এজলাস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ছবি তুলতে গিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসির ক্যামেরাপার্সন পারভেজ রহমানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন নাছির। এ সময় ছবি কেন তোলা হচ্ছে জানতে চেয়ে তার ক্যামেরা কেড়ে নেয়ার চেস্টা করেন নাছির। এমনকি পানির বোতল ছুড়ে মারতেও উদ্যত হয়। এসময় পুলিশ তাকে সরিয়ে নেয়। সহকারী পিপি রায়হাদ চৌধুরী রনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। আদালতের মামলার নথি থেকে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ৬ই এপ্রিল চট্টগ্রাম কলেজের শেরেবাংলা ছাত্রাবাস নাছিরকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেপ্তার এড়াতে নাছির ছাত্রাবাসটির সামনে শিক্ষকদের আবাসনের পরিত্যক্ত ভবনের জানালা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় নগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা আতিকুর রহমান চৌধুরী ঝাপটে ধরে নাছিরকে আটক করেন। তখন পুলিশকে লক্ষ্য করে ছাত্রাবাস থেকে গুলিবর্ষণ করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসীরা। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ আহত হয়। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি থানায় নাছির, ইয়াকুব ও হুমায়ন নামে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। পরে নাজিরহাটে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ইয়াকুব ও হুমায়ন মারা যায়। এ মামলায় ২০০১ সালের ১৭ নভেম্বর নাছিরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ছয় জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ বুধবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে আদালত। এদিকে আদালতে রায়ের সংবাদ কাভার করতে গিয়ে পুলিশের হাতেও লাঞ্ছিত হয়েছেন প্রথম আলোর ফটো সাংবাদিক জুয়েল শীল ও দৈনিক আজাদীর ফটো সাংবাদিক আমিন মুন্না। বুধবার (৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। জুয়েল শীল ও আমিন মুন্না বলেন, আদালতে শিবির ক্যাডার নাছিরের মামলার শুনানি থাকায় আমরা ছবি তোলার জন্য গিয়েছিলাম। আদালত প্রাঙ্গণে আমাদের মোটরসাইকেলটি একপাশে রেখে ভিতরের দিকে যাচ্ছিলাম। তখন পুলিশের এক গাড়ি চালক কনস্টেবল ইফতেখার এসে আমাদের গাড়ি এখানে কেন রেখেছি, তা নিয়ে গালিগালাজ করে আমাদেরকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। আমাদের ক্যামেরা কেড়ে নেয়। এমনকি পুলিশের গাড়ি দিয়ে আমাদের চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী দু:খ প্রকাশ করে বলেন, পুলিশের ওই কনস্টেবলকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিভাগীয় তদন্তে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
| M | T | W | T | F | S | S |
|---|---|---|---|---|---|---|
| 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 |
| 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 |
| 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 |
| 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 |
| 29 | 30 | 31 | ||||
