শিরিন আক্তারের মৃত্যুর এক দিন পর ধরা পড়ল সেই ছিনতাইকারীদের একজন। সেদিন সে মোটর সাইকেলটি চালিয়েছিল। তার নাম আরশাদ উল্লাহ প্রকাশ এরশাদ (২৮)। নগরীর লাভলেইন এলাকায় তার বাসা থেকেই উদ্ধার করা হয় মোটর সাইকেলটি।
অজ্ঞাত কারণে নগর পুলিশের কর্তা ব্যক্তিদের কেউ অভিযানটির কথা স্বীকার করতে না চাইলেও গতকাল বিকালে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে একাধিকজন আজাদীকে জানিয়েছেন, পুলিশের কোন কর্মকর্তার নেতৃত্বে অভিযান চলেছে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির অতীত কর্মকাণ্ড, এমনকি তার মা কার বাসার কাজের বুয়া–এমন নানা তথ্য। শুধু তাই নয়, তার মায়ের ‘ক্ষমতাবলে’ সেই ছিনতাইয়ের ঘটনায় শিরিনের মৃত্যু সংবাদ জেনেও পালিয়ে না গিয়ে ঘরেই ছিল।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিএমপির অতিরিক্ত উপ–কমিশনার (পশ্চিম) শাহ মোহাম্মদ আবদুর রউফ দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা নিশ্চিত হলে আপনাদের জানাব।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার শিরিন আক্তার গ্রাম থেকে ঈদের কেনাকাটার জন্য নগরীর ব্যাটারি গলিতে বোনের বাসায় এসেছিলেন। রাত ৯টার দিকে ব্যাটারি গলির বাসা থেকে বোনের সাথে রিকশায় করে টেরীবাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। রিকশাটি জামালখান আইডিয়াল স্কুলের সামনে পৌঁছলে পেছন দিক থেকে মোটরসাইকেলে করে আসা টানা পার্টির দুই সদস্যের মধ্যে পেছনের আরোহী শিরিনের ভ্যানিটি ব্যাগটি ছোঁ মেরে নিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় তাল সামলাতে না পেরে শিরিন রিকশা থেকে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিসাধীন অবস্থায় গত সোমবার গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র আজাদীকে জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই পুলিশের একটি বিশেষ টিম এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে। পুলিশ জানতে পারে মোটর সাইকেলে দু’জন ছিল। এরই মধ্যে সোমবার রাতে চকবাজার এলাকায় একটি ছিনতাই হয়। ওই ছিনতাইয়ে এই মোটর সাইকেলটি ব্যবহৃত হয়। ছিনতাইয়ের স্বীকার ব্যক্তি মোটর সাইকেলের নম্বরটি টুকে নেন। পরে চকবাজার থানায় অভিযোগ করেন। চকবাজার থানা পুলিশ মোটর সাইকেলটির সন্ধান করতে গিয়ে দেখে সেটির মালিক লাভলেইন থাকে। জানানো হয় কোতোয়ালী থানা পুলিশকে। পরে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে গতকাল বিকালে পুলিশ অভিযান চালায়। ইফতারের কিছুক্ষণ আগে অভিযান চালিয়ে বাসা থেকেই তার মোটর সাইকেলটি উদ্ধার করে এবং এরশাদকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি দামি ভ্যানিটি ব্যাগ।
পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা, শিরিনের মতো আরো অসংখ্য নারীর ব্যাগ এভাবে ছোঁ মেরেছে এরশাদ ও তার সহযোগীরা। হয়ত তাদেরকে শিরিনের করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়নি।
পুলিশের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, এরশাদ একজন পেশাদার ছিনতাইকারী। স্থানীয়রাও গতকাল জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে এলাকায় প্রতারণা ও ছিনতাইয়ের নানা অভিযোগ রয়েছে। ইতোপূর্বে একাধিকবার সে ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে। আবার কয়েকবার থানায় গিয়ে ফিরে এসেছে কোন এক জাদুর ক্ষমতাবলে।
– See more at: http://www.dainikazadi.org/details2.php?news_id=2002&table=june2017&date=2017-06-21&page_id=1&view=0&instant_status=0#sthash.ozhEEZZw.dpuf
