ফিলিস্তিন ‘লিভিং ঈগল’খ্যাত বিমান বাহিনীর সাবেক পাইলট সাইফুল আজমের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়েছে । দেশটির সামাজিক কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলেই সাইফুল আজমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। খবর আল জাজিরার।

ফেসবুকে তার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ফিলিস্তিনের ইতিহাসবিদ ওসামা আল আশকার বলেন, আজম একজন দুর্দান্ত বিমানচালক ছিলেন। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ভাইয়েরা আল-আকসা মসজিদ রক্ষা ও প্রতিরোধে আমাদের সহযোগী ছিলেন।

সেখানকার আরেক অধ্যাপক নাজি শৌকরিও টুইটারে সাইফুল আজমের জন্য প্রার্থনা জানিয়ে লিখেছেন, সাইফুল আজম ফিলিস্তিনকে ভালোবেসেছিলেন এবং জেরুজালেমের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন। তার প্রতি স্যালুট। আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করুন তিনি।

সুপরিচিত ফিলিস্তিন সাংবাদিক তামির আল-মিশাল তাকে ‘আকাশের ইগল’ বলে উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে বিশেষ ব্যক্তি ছিলেন সাইফুল আজম। তিনি এমন ব্যক্তি যিনি তিনটি দেশের হয়ে যুদ্ধ বিমানের পাইলটের দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশগুলো হলো জর্দান, ইরাক ও পাকিস্তান।

১৯৬৭ সালের ৫ জুন, চারটি ইসরায়েলি যুদ্ধ বিমান জর্ডানের মাফরাক বিমানবন্দরে দেশের ক্ষুদ্র বিমান বাহিনীকে ধ্বংস করার জন্য নেমে আসছিল। এর আগে ইসরায়েলি বিমানগুলো পুরো মিশরীয় বিমান বাহিনী ধ্বংস করে দিয়েছিল। এই সময়ে জর্ডানের বিমান বাহিনীর কমান্ডার সাইফুল আযমকে ইসরায়েলের আক্রমণ ব্যর্থ করার জন্য মোতায়েন করেন। তিনি সেসময় ইসরায়েলের দুটি বিমানকে ভূপাতিত করেন। এর দুদিন পর তাকে ইরাকে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি আরও দুটি ইসরায়েলি বিমান ভূপাতিত করেন।

গত রোববার সকালে ঢাকার মহাখালিতে নিজ বাস ভবনে ইন্তেকাল করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। দীর্ঘদিন তিনি নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন।

১৯৪১ সালে পাবনা জেলার খগড়বাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সাইফুল আজম। উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পাশ করে ১৯৫৬ সালে উচ্চতর শিক্ষার্থে পশ্চিম পাকিস্তান যান। ১৯৬০ সালে জিডি পাইলট ব্রাঞ্চের একজন পাইলট হন তিনি। ১৯৭১ সালের পূর্বে তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। পৃথিবীর ২০ জন “লিভিং ঈগলের” মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031