নির্বাচন কমিশন যে আলোচনার আয়োজন করেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে, তাতে এবারও না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন আজ শনিবার দিনভর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে এই আলোচনার আয়োজন রেখেছে। সকালে ও বিকালে দুই ভাগে ২২টি করে দলকে এতে অংশ নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ডাকা হয়েছে সকালে। বিএনপি এবং জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে ডাকা হয়েছে বিকালে। প্রতিটি দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বা দলের দুজন মনোনীত প্রতিনিধি থাকতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।

ভোট নিয়ে বিবদমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়েছে। মতভেদ নিরসনে সংলাপের তাগিদ এসেছে দলসহ বিভিন্ন মহল থেকে; কূটনৈতিক মহলেও চলছে দৌড়ঝাঁপ। এর মধ্যে এই আলোচনার আহ্বান এসেছিল কমিশনের তরফে। তবে বিএনপির অবস্থান পাল্টায়নি এতটুকু। দেওয়ার মতো কাউকে না পেয়ে বিএনপি অফিসের কলাপসিবল গেইটের ভেতরে চেয়ারের ওপর আমন্ত্রণের চিঠি রেখে এসেছেন ইসির বার্তবাহন।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন, সরকারের পদত্যাগসহ নানা দাবিতে আন্দোলনে থাকা দলটি এরই মধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ের কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছে। গত সপ্তাহে পাঁচটি কর্মদিবসের মধ্যে একদিন হরতাল ও তিন দিন অবরোধ পালন করেছে তারা। আগামী রোব ও সোমবার অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে।

অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিও বার্তায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এটা (ইসির চিঠি) কীসের সংলাপ? কার জন্য সংলাপ? দলের শীর্ষ নেতাদের বন্দি করে, বাড়ি ছাড়া করে, ঘর ছাড়া করে ওরা কীসের সংলাপ করতে চায়? সরকারের নির্দেশে এই তামাশাগুলো করা হচ্ছে, উপহাসগুলো করা হচ্ছে, ঠাট্টা–ইয়ার্কি করা হচ্ছে সংলাপের নামে নির্বাচন কমিশন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এর আগে দুই দফা সংলাপ করেছে। তবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো দুইবারই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এই নির্বাচন কমিশনের ওপর তাদের কোনো ভরসা নেই। বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় না থাকা সিপিবি ও বাসদের মতো দলগুলোও গত মার্চে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে। এমন দলের সংখ্যা ৯টি। এবার তারা ইসির ডাকে সাড়া দেবে কিনা এই প্রশ্নে কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

নির্বাচন কমিশন দলগুলোকে পাঠানো চিঠিতে তাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে, একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদপূর্তির কারণে আগামী জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতেই হবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031