ফ্রান্সে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৯ জন মারা গেছেন। করোনা ভাইরাসে (কভিড-১৯) মৃতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। এতে আক্রান্ত হয়ে ইতালিতে মৃতের সংখ্যা একদিনে ১৩৩ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬৬। এসব তথ্য সরকারি। ফ্রান্সের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সির তথ্যমতে, সেখানে এর আগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৮৮৩। এই সংখ্যা শতকরা ২৫ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৩৭৫। লক ডাউন সহ স্কুল, কলেজ বন্ধ করে দেয়ার পরও আক্রান্তের সংখ্যা সেখানে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
বাস্তবে আক্রান্তের এ সংখ্যা কত তা কেউ বলতে পারছেন না। ওদিকে ফ্রান্সে তিনজন সংসদ সদস্যসহ আক্রান্ত হয়েছেন ১১২৬ জন। এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ ৩৩৬ জন। তাদেরকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
অনলাইন বিবিসি সহ
ফ্রান্সের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে
একজন মহিলা সংসদ সদস্যকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে তার নাম প্রকাশ করা
হয়নি। আরো ৬ জনকে পরীক্ষা করার জন্য নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫ জন সংসদ সদস্য
এবং একজন কর্মচারী রয়েছেন। বৃহস্পতিবার হাউট-রিন অঞ্চলের সংসদ সদস্য
জ্যাঁ-লুক রিটজার প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায়
হাসপাতালে ভর্তি হন। রিফ্রেশমেন্ট বারের ইনচার্জ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত
হয়ে নিজ গৃহেই বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন। এছাড়া ইউনেস্কো সদর দপ্তরে মার্চ
মাসের সকল অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ইউনেস্কোর সকল সদস্য
দেশ নিয়ে বাৎসরিক সভাও স্থগিত করা হয়েছে। আজ থেকে সকল মেট্রোতেও ভাইরাস
সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বনে বিশেষ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ২য় ধাপের
চিকিৎসা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা চলছে। তবে যে কোন সময় ৩য় ধাপের ঘোষণা আসতে
পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
যদিও জ্বর দিয়ে ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়,
এরপরে শুকনো কাশি দেখা দিতে পারে। প্রায় এক সপ্তাহ পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে
যায়। অনেক রোগিকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়। প্রতি চারজনের
মধ্যে অন্তত একজনের অবস্থা মারাত্মক পর্যায়ে যায় বলে মনে করা হয়। আক্রান্ত
রোগিদের মধ্যে হালকা ঠান্ডা লাগা থেকে শুরু করে মৃত্যুর সব উপসর্গ দেখা
দিতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরার অধ্যাপক মার্ক উলহাউজ বলেছেন, যখন
আমরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কাউকে দেখতে পাই, বোঝার চেষ্টা করি লক্ষণগুলো
কতটা মারাত্মক। এটা ঠান্ডা লাগার লক্ষণগুলোর চেয়ে একটি বেশি, সেটা
উদ্বেগজনক হলেও, সার্সের মতো অতোটা মারাত্মক নয়। করোনা ভাইরাসের
প্রাদুর্ভাব অনেককে সার্স ভাইরাসের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে, যা ২০০০ সালের
শুরুতে প্রধানত এশিয়ার অনেক দেশে ৭৭৪ জনের মৃত্যুর কারণ হয়েছিলো ।
বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারির কথা ভাবছে বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থা, যেমনটি তারা করেছিল সোয়াইন ফ্লু এবং ইবোলার সময়।