সরকার দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিক্ষাকে বহুমাত্রিক করতে কাজ করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন। তিনি বলেন, প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি, ফ্যাশন ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে আধুনিক যুগে কি কি ধরনের বিষয় লাগে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছি।

গতকাল দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি, টিউশন ফি, ভর্তি সহায়তা ও চিকিৎসা অনুদান বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ সচিবালয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে এদিন এক লাখ ৬৩ হাজার ৫৮২ জন শিক্ষার্থীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে উপবৃত্তি, টিউশন ফি, ভর্তি সহায়তা ও চিকিৎসা অনুদান বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানের সঙ্গে পটুয়াখালীর গলাচিপা, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা এবং বান্দরবান সদর উপজেলা সংযুক্ত ছিল।

প্রধানমন্ত্রী পরে উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। অর্থাৎ বিষয় নির্বাচন করে বাংলাদেশের যেসব এলাকায় যে ধরনের শিক্ষার গুরুত্ব বেশি আমরা সেভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো করে দিচ্ছি। যাতে সকলেই শিক্ষাটা যথাযথভাবে গ্রহণ করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি শিক্ষা বা কারিগরি শিক্ষাটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কেননা, এটা দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। সরকারপ্রধান বলেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৪৫ কোটি ৮৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বাবদ বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষার প্রসারে প্রতিটি উপজেলায় ১টি করে টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপন করা হচ্ছে এবং প্রতিটি বিভাগীয় সদরে ১টি করে মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপন করা হচ্ছে। প্রতি জেলায় একটি করে সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় করা হচ্ছে।

কোভিড-১৯ এর কারণে দেশের সকল স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী ৩০শে মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সক্ষম হবো। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারী যারা রয়েছেন সবাইকে টিকা নিতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকেও টিকা দেয়া হবে বলে তিনি জানান। শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে শিক্ষার মান বেড়েছে এবং সব পাবলিক পরীক্ষায় ফলাফলও ভালো হচ্ছে। পাশাপাশি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রমে আই.সি.টি. বিষয় আবশ্যিক করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, ডিজিটাল কনটেন্ট ও অন্যান্য বিষয়ে ৫ লক্ষাধিক শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান এবং শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। পাহাড়, হাওড়সহ বিভিন্ন দুর্গম অঞ্চলে শিক্ষা সম্প্রসারণে সরকার সেসব এলাকায় আবাসিক বিদালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্গম, চরাঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বিবেচনায় নিয়ে এ অঞ্চলগুলোতে শতভাগ শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031