ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী ৫০ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে নগরীর খুলশী থানার পরিবেশ অধিদপ্তর সংলগ্ন একটি পাহাড় থেকে । এর মধ্যে ১০ পরিবার অধিক ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিল। এসময় পাহাড়টিতে অবৈধভাবে গড়ে তোলা বিভিন্ন বাসা থেকে বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। টিনের ছাদ ও ঘেরাও দিয়ে এখানে ঘরগুলো তৈরি করে হয়েছে। শক্তিশালী পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় গঠিত সাব কমিটি গতকাল দুপুরে এ উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসমাইল হোসেন এবং কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম। উচ্ছেদ অভিযান শেষে পাহাড়টির মালিক রেলওয়ের প্রতিনিধিকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। উচ্ছেদকৃত পরিবারগুলোতে ১৫৬ জন সদস্য ছিল।
এদিকে উচ্ছেদকৃত পরিবারের সদস্যদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, তাদের অন্যত্র সরে যেতে ইতোপূর্বে কোন নোটিশ দেয়া হয়নি। এসময় অনেকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথাও বলেন। কোহিনুর আকতার নামে এক মহিলা বলেন, আমার কোন ছেলে-মেয়ে নাই। মানুষের বাসা-বাড়িতে কাজ-কাম করে ভরণপোষণের ব্যয় নির্বাহ করি। উচ্ছেদ করলে কোথায় যাব। তবে নোটিশ না দেয়ার অভিযোগটি সঠিক নয় বলে জানিয়েছে প্রশাসন। অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৫ ও ৩০ মে নোটিশ দেয়া হযেছিল। সর্বশেষ ২ জুলাইও তাদের সরে যেতে অনুরোধ করা হয়। এ সময় ভারী বর্ষণে পাহাড় ধস হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেও সেখানে বসবাসকারীদের সর্তক করেছিল প্রশাসন। এরপরও অন্যত্র সরে না যাওয়ায় সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে তাদের উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জেলা প্রশাসনের কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘টানা বৃষ্টি হলে পাহাড়ধসে বসতঘরগুলোতে বসবাসরতদের প্রাণহানির সম্ভাবনা ছিল। তাই সেখানে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘অবৈধ বসতি উচ্ছেদ শেষে পাহাড়টি রেলওয়ে এবং নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপর পাহাড়ে কোনো অবৈধ বসতি বা স্থাপনা গড়ে তোলা হলে সংশ্লিষ্ট পাহাড়ের মালিক কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ১৭ টি পাহাড়ে চিহ্নিত ৮৩৫ টি ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারকে উচ্ছেদে প্রথম ধাপে অভিযান চালানো হয়েছিল রমজানের পূর্বে। ওইসময় মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, পোড়া কলোনী পাহাড়, একে খান পাহাড় এলাকায় ৩৫০ এর মতো ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে গতকাল শুরু হওয়া অভিযান চলবে ১৭ জুলাই পর্যন্ত।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031