রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে তার বিরুদ্ধে নেই তেমন কোনো সমালোচনা। দীর্ঘ ১৭ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তার। পদোন্নতি পেয়ে একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীতেও স্থান পেয়েছেন তিনি। তবে ২০০৯ সালের জাতীয় সম্মেলনে দলের সর্বোচ্চ ফোরামে যোগ দিলেও গত সাত বছরে রাজনৈতিক কারিশমা দেখাতে পারেননি তিনি।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সাহারা খাতুনকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়। তার বিরুদ্ধে তেমন কোনো অভিযোগ না থাকলেও নানা সময় বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে গণমাধ্যমে সমালোচিত হন সাহারা।

২০১২ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে ডাক ও টেলিযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয় সাহারাকে। তবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি তার।

সেই থেকে অনেকটা আলোচনার বাইরে এই বর্ষীয়ান নারী রাজনীতিক।

এর আগে ২০০০ সালে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন সাহারা খাতুন। এখনো এই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তিনি। ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের ১৭তম জাতীয় সম্মেলনের পর তিনি পান দলের আইনবিষয়ক সম্পাদক পদটি।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে ছিলেন সাহারা খাতুন। ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এই আইনজীবী নেতা। সেই সুবাদে ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ১৮তম সম্মেলনে পদোন্নতি পেয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন।

২০১২ সালে আওয়ামী লীগের ১৯তম সম্মেলনে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামে নিজের অবস্থান অক্ষুণ্ন রাখেন সাহারা।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ দিন আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতির পদ দখলে রাখায় আইনজীবীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া আছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে সাহারার এই পদ দখল করে রাখার কারণে একাধিকবার পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগপন্থিরা। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুটা নাখোশ সাহারার ওপর।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার মতো এবার দলের সভাপতিমণ্ডলী থেকেও বাদ পড়তে পারেন সাহারা। এর বদলে দলের উপদেষ্টা পরিষদে তার স্থান হতে পারে।

তবে এ নিয়ে নাম প্রকাশ করে কোনো নেতা বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

তবে একাধিক নেতা ঢাকাটাইমসকে বলেছেন, বয়সের কারণে প্রায়ই অসুস্থ থাকেন সাহারা খাতুন। আর এ কারণে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে তেমন সময় দিতে পারেন না। তাই তার দায়িত্ব কমানোর চিন্তা করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বরাবর দলের শীর্ষস্থানীয় পদগুলোতে নানা পরিবর্তন হয়। একেই দলের শক্তি হিসেবে বলছেন দলের শীর্ষ নেতারা। ২০০৯ সালের জাতীয় সম্মেলনেও দলের প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, তোফায়েল আহমেদ ও আবদুল জলিলকে সভাপতিমণ্ডলী থেকে উপদেষ্টা পরিষদে স্থান দেয়া হয়।

২০১২ সালেও মহিউদ্দিন খান আলমগীর, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুকে সভাপতিমণ্ডলী থেকে বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে নেওয়া হয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031