নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনের মত প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আজম নাছির উদ্দিন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষের (সিডিএ) নতুন চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বৈঠকে মিলিত হয়ে । এতে দুই কর্তা জরুরি ভিত্তিতে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেন।
বৃহস্পতিবার ( ৯ মে) বিকেলে সিডিএ কনফারেন্স হলে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্প বিষয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিডিএ ও চসিকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সিডিএ এর চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পটি সিডিএ’র আওতাধীন আসা ঠিক হয়নি। এ ব্যাপারে সিডিএ’র কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে।
অপরদিকে সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসনে পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। রয়েছে যন্ত্রপাতি ও পর্যাপ্ত জনবল। তাই চসিককে দিয়েই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে অনেক সুফল বয়ে আসত বলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত দেড় বছরে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের যতটুকু অগ্রগতি হওয়ার দরকার ছিল ততটুকু হয়নি। এ প্রকল্প কীভাবে সফল করা যায়, তা চসিক, সিডিএসহ নগরীর সম্পৃক্ত সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর উপর গুরুত্ব দিতে হবে।’
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকার ২০১৭ সালে চারটি প্রকল্পে ১০ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে সিডিএ বাস্তবায়ন করছে ৭ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার দুটি প্রকল্প।
আর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে। এছাড়া চসিক ১ হাজার ২৫৬ কোটি বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী খাল খননের দায়িত্ব পেয়েছে।
এসব প্রকল্পে নালা-নর্দমা ও খালের পুনঃখনন, বাঁধ নির্মাণ, জোয়ার প্রতিরোধক ফটক, খালের দুই পাশে প্রতিরোধ দেয়াল, সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ এবং বালুর বাঁধ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে চসিকের এ প্রকল্পটি নতুন খাল খনন এর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
সভায় মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সব সেবা সংস্থাকে সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে।
ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের মেয়াদ দেড় বছর অতিবাহিত হয়েছে। আগামী জুন ২০২০ এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। এই সময়ের মধ্যে পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা কঠিন। তাাই এ কাজে আর কোনো সময় নষ্ট করার সুযোগ নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমন্বয় করে এই নগরের যাবতীয় উন্নয়ন করতে হবে। চসিক এবং সিডিএ দুটিই সরকারি প্রতিষ্ঠান। আমরা যারা এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে আছি তারা শুধুমাত্র দায়িত্বপালন করে চলেছি।
প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। এই প্রকল্প যাতে টেকসই হয়, নগরবাসীর মধ্যে স্বাস্তি ও সুফল বয়ে আনতে পারে সে ব্যাপারে আমাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
সভায় আরও বক্তব্য দেন ছিলেন- চসিক কাউন্সিলর ও সিডিএর বোর্ড সদস্য কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, গিয়াস উদ্দিন আহমদ, তারেক সোলায়মান সেলিম, জসিম উদ্দিন শাহ, চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে.কর্ণেল মহিউদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক এবং সিডিএর সচিব তাহেরা ফেরদৌস বেগম, প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস্, চিফ টাউন প্লানার শাহিনুল ইসলাম খান, এলিভেট এক্সপ্রেসের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান এবং প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার প্রমুখ।
