স্টারলাইন ফুড কারখানায় ভয়াবহ আগুনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফেনীতে । বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের কাশিমপুর এলাকায় অবস্থিত স্টারলাইন ফুড প্রোডাক্ট কারখানার প্যাকেজিং (কাটুন শেড) থেকে লাগা আগুন আশপাশের কয়েকটি কারখানার শেডে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফেনী ও আশপাশের জেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যেয়ে প্রায় ৫ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। আগুনে তিনতলা ভবনের একটি শেড হেলে পড়েছে। আগুনে উৎপাদিত পন্যসহ অন্তত ২৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মালিকপক্ষ দাবি করেছে।

ফেনী ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী জানান, শ্রমিকদের ভাষ্যমতে কাশিমপুরে অবস্থিত স্টারলাইন ফুড কারখানার প্যাকেজিং (কাটুন শেড) থেকে রাত ১২টার দিকে আগুনের সুত্রপাত হয়। কারখানার কাটুন শেড থেকে লাগা আগুন মুহুর্তে পাশবর্তী বেকারী, শেমাই, নুডুস কারখানাসহ আশ পাশের আরো কয়েকটি কারখানা শেডে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফেনী থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ শুরু করে।

পরে তাদের সাথে ফেনীর ৫টি উপজেলা টিম ও পাশবর্তী নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে আরো দুটি টিম মিলিয়ে ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ চালায়। তবে আগুনের শুরুতে কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা দ্রুত বেরিয়ে পড়ায় তাতক্ষনিকভাবে হতাহতের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

ফেনী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জাকির হোসেন জানান, ভোর ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনলেও সকাল ৮টা পর্যন্ত দুটি ইউনিট আগুন পুরোপুরি নিষ্কৃয় করতে কাজ করে। আগুনে কারখানার একটি তিনতলা ভবন হেলে পড়েছে। তবে আগুনে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তাতক্ষনিক বিস্তারিত জানাতে পারে নি স্টেশন অফিসার।

এদিকে কারখানায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ করার করানে ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়কের কাশিমপুর অংশে দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকায় রাতে সড়কের দু’পাশে তীব্র জানযট দেখা দেয়। পরে দমকাল বাহিনীর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

স্টার লাইন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক জাফর উদ্দিন জানান, স্টারলাইন ফুড প্রোডাক্ট কারখানার বিস্কুট, চানাচুর, বার্গার, পেস্টি, মিষ্টিসহ প্রায় শতাধিক আইটেমের খাদ্য সামগ্রী তৈরি করা হতো। কারখানায় সকল ধরণের কঞ্জুমার আইটেমের পাশাপাশি মিনারেল ওয়াটার প্রক্রিয়াজাত করা হয়। কারখানায় অন্তত দেড় হাজার শ্রমিক কাজ করে। আগুন লাগার সময়ে প্রায় ৮ শতাধিক শ্রমিক কর্মরত ছিলো।

নির্বাহী পরিচালক জাফর উদ্দিন আরো জানান, আগুনে কারখানার কয়েকটি শেড ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুন লাগার সময় প্রায় তিন কোটি টাকার উৎপাদিত পন্য ডেলিভারির জন্য কারখানায় প্রস্তুত ছিলো। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করা না গেলেও অন্তত ২৫ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হতে পারে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031