বুধবার সকালে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজে নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন।  ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের জীবনাবসান হয়েছে আছ।  হকিং ১৯৬৩ সালে ২২ বছর বয়সে মোটর নিউরোন রোগে আক্রান্ত হয়ে চলাফেরা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন। বিশেষ হুইল চেয়ারেই তার শেষ জীবন কেটেছে।

এই বিজ্ঞানী কৃষ্ণ গহ্বর এবং আপেক্ষিকতা তত্ত্ব নিয়ে তার কাজের জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু ভক্ত ও অনুসারীদের কাছে আক্ষেপের বিষয় এই হকিং তার জীবদ্দশায় নোবেল পুরস্কার পাননি।

স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে স্টিফেন হকিংকে কেন নোবেল পুরস্কার দেয়া হলো না?

যদিও আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের জনক আলবার্ট আইনস্টাইনকে নোবেল পুরস্কার দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছিল নোবেল ফাউন্ডেশন। কেননা, আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ল্যাবরেটরিতে প্রমাণের সুযোগ ছিল না। কিন্তু শেষ অবধি ১৯২১ সালে আইনস্টাইনের ভাগ্যে নোবেল জোটে।

আইনস্টাইনের জগতেরই মানুষ হকিং। দুজনেই পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করেছেন। আইনস্টাইন যেমন আপেক্ষিকতা তত্ত্ব উদ্ভাবন করে দুনিয়া মাত করেছেন তেমনি হকিংও সেই আপেক্ষিকতা তত্ত্ব, ব্ল্যাক হোল এবং তত্ত্বীয় কসমোলজি আর কোয়ান্টাম মধ্যাকর্ষ নিয়ে কাজ করেছেন।

১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হকিংয়ের লেখা বই ‘অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ সর্বকালের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বইয়ের মধ্যে অন্যতম। এসব গবেষণা কর্ম হকিং সারা পৃথিবীতে পরিচিত করার পাশাপাশি এনে দেয় খ্যাতিও। কিন্তু নোবেল? কেন সেটা জুটলো না? এর কারণটা কি?

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পত্রিকায় দ্য সায়েন্স অব লিবার্টির লেখক টিমথি ফেরিস লিখেছেন, ‘যদিও থিওরেটিক্যাল ফিজিক্সে এখনও তার ব্ল্যাক হোলস আর মর্টাল থিউরি যথেষ্টই প্রতিষ্ঠিত তবুও তার তত্ত্ব প্রমাণ করার কোনো উপায় ছিল না। যদি কোনোভাবে তিনি সেই তত্ত্ব প্রমাণ করতে পারতেন তবে নিশ্চয়ই নোবেল পেতেন।’

টিমথি ফেরিস তার লেখায় এও বলেন, ‘এই তত্ত্ব প্রমাণ করা বর্তমানে প্রায় অসম্ভব। তারারা আকারের প্রথম ব্ল্যাক হোল বিস্ফোরণে এখনও কয়েক লাখ কোটি বছর বাকি রয়েছে।’

প্রমাণের অভাবে ঠিক একই কারণে ১৯৬৪ সালে পিটার হিগস ‘গিগস বোসন’ তত্ত্বের জন্য নোবেল পাননি। দীর্ঘ ৪৯ বছর পর ‘সিইআরএন’ এই তত্ত্বকে প্রমাণ করার পরই ২০১৩ সালে ফ্রাঁসোয়া এঙ্গলার্টের সঙ্গে যৌথভাবে পিটার হিগস নোবেল পান।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031