গরমে অতীষ্ঠ বাস যাত্রীদের মধ্যে কথা হচ্ছিল জামায়াতের ডাকা হরতাল নিয়ে। বেলা ১১টা। ফার্মগেটের খামারবাড়ীর সামনে তীব্র যানজট।
মিরপুর-যাত্রবাড়ী-সাইনবোর্ড রুটের বাসুমতি পরিবহনের এক যাত্রী বলছিলেন, ‘শুনেছিলাম আজ আজকে হরতাল। ভাবলাম যানজট কম হবে। তাই দেরি করে বাসা থেকে বের হলাম। কিন্তু রাস্তায় দেখি তার কোন প্রভাব নেই।’
ওই যাত্রীর পাশে বসা এক যাত্রী এ সময় বলে উঠেন, ‘কিসের হরতাল? কে হরতাল ডেকেছে? কেন ডেকেছে?’
অন্য একজন যাত্রী বলছিলেন, ‘যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করায় জামায়াত এই হরতালর ডেকেছে।’
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে গত শনিবার রাতে। এর প্রতিবাদে আজ সোমবার আধাবেলা হরতাল ডাকে জামায়াত। তবে হরতাল ডেকেও এর সমর্থকে মাঠে নামেনি মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরা দলটি। ফলে ভোর থেকে হরতালের কোনো নমুনাই দেখা যায়নি রাজধানী বা দেশের কোথাও। নগর পরিবহনের পাশাপাশি দূরাপাল্লার বাসও চলেছে সময় মত। ঠিকমতই ছেড়েছে ট্রেন ও লঞ্চ।
বছর তিনেক আগেও জামায়াতের হরতাল মানেই ছিল আতঙ্ক, উদ্বেগ, সাধারণ মানুষের ওপর পেট্রল বোমা হামলার বিভীষিকা। তাই নাশকতা ঠেকাতে জামায়াতের হরতালের আগে থেকেই মোড়ে মোড়ে মোতায়েন থাকতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সশস্ত্র কর্মীদের পাশাপাশি সতর্ক পাহারায় থাকতো গোয়েন্দারাও। জামায়াতের আজকের হরতালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন কোনো অবস্থানও দেখা যায়নি।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কাসেম আলীর রিভিউয়ের রায় খারিজ করে দেয়ার পর গত বুধবার ডাকা হরতালেও একই চিত্র দেখা গেছে। সেদিনও কর্মসূচির পক্ষে মাঠে নামেনি দলটির নেতা-কর্মীরা। আর গণপরিবহণ বা ব্যক্তিগত গাড়ি চলেছে অন্যান্য দিনের মতই।
হরতালে জামায়াতের কোন কর্মকান্ড না দেখা গেলেও হরতাল বিরোধী মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রবিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে হরতালবিরোধী মিছিল সমাবেশ করে দলটি। শাহবাগ থানার উদ্যোগে এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘জামায়াতের হরতালে জনগণের সাড়া নেই। জনগণ যুদ্ধাপরাধীদের প্রত্যাখান করছে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘জনগণের নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা সতর্ক আছে। তারা জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সক্ষম।’
