ঢাকা : ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর পুরান ঢাকা থেকে তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে । গত শুক্রবার দিবাগত রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের নেতা-কর্মী বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার ইউসুফ আলী জানান, আটকদের মধ্যে মাওলানা নাজিম উদ্দিন হরকাতুল জিহাদের ঢাকা উত্তর শাখার সভাপতি। অন্য দুইজন হলেন মো. আনাছ ও সায়েদুজ্জামান। তিন জনই জঙ্গি জানালেও এদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আছে কি না তা জানাতে পারেননি ইউসুফ আলী।
নব্বই দশকের শুরুর দিকে বাংলাদেশে তৎপরতা শুরু করে আন্তর্জাতিক এই জঙ্গি সংগঠনটি। সে সময় জাতীয় প্রেসক্লাবে রীতিমত সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনের ঘোষণা দেন হুজি নেতারা। শুরুর দিকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র-শিক্ষকদের উদ্বুদ্ধ করতো হুজি নেতারা। যারা এই যুদ্ধে যেতেন তাদেরকে মুজাহিদ বলা হতো।
এই যুদ্ধ শেখ হলেও বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েমের স্বপ্নে বিভোর ছিল হুজি। বাংলাদেশে ১৯৯৮ সালে যশোরে সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচীর জাতীয় সম্মেলনে বোমা হামলা এবং ২০০১ সালে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আছে হুজির বিরুদ্ধে। ওই বছরেই গোপালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় বোমা হামলার চেষ্টা করার অভিযোগ আছে সংগঠনটির বিরুদ্ধে। তবে ঘটনাচক্রে বিশাল বোমাটি উদ্ধার হয় এবং প্রাণে বেঁচে যান বহু মানুষ।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানোর অভিযোগও আছে হজির বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে সংগঠনটির সাবেক আমির মুফতি হান্নানের বিচার চলছে।
গোয়েন্দারা বলছে, নানা সময় গ্রেপ্তার অভিযানে হুজি নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার হলেও গোপন তৎপরতা এখনও চালু রেখেছে হরকাতুল জিহাদ। আর শক্তি হারালেও নাশকতা চেষ্টা তারা চালিয়ে যাচ্ছে-বলছেন গোয়েন্দারা।
