১০ কিলোমিটার রাস্তায় সরকারি গাছের সংখ্যা থাকার কথা ১০ হাজার রাজধানীর গাবতলী থেকে লালবাগ কেল্লা পর্যন্ত । কিন্তু সেখানে গাছ গুণে পাওয়া গেছে সংখ্যা পাঁচ ৩৫৬ টি।
২০১২ গাবতলী বেড়িবাঁধ থেকে লালবাগ পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে রোপণ করা হয়েছিল গাছগুলো। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে দিন দিন কমেছে গাছের সংখ্যা। শঙ্কা আছে বর্তমানে টিকে থাকা গাছের ভবিষ্যৎ নিয়েও।
গাবতলী গরুর হাট থেকে শুরু করে সুনিবিড় হাউজিং (স্লুইসগেট) পর্যন্ত এলাকায় উধাও হয়েছে সবচেয়ে বেশি গাছ। সেখানে গাছ কেটে বসানো হয়েছে বালুর গদি। তৈরি করা হয়েছে দোকানপাট।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, ‘গাছ তো আছিল। কে কবে কাটছে কে জানে? সরকারি গাছের খবর কেডা রাহে?’
গরুর হাট থেকে দ্বীপ নগর এলাকা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশেই রাখা হয় ট্রাক। আর ট্রাক রাখতে ও বের করতে গিয়ে নষ্ট হচ্ছে গাছ।
ট্রাক রাখার প্রয়োজনে খেয়াল খুশি মত ট্রাকের ধাক্কায় ভেঙে ফেলা হয়েছে গাছগুলো। আছে রাতে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার মত অভিযোগও আছে।
অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেল আন্তঃজেলা ট্রাক চালক ইউনিয়ন নেতা সাদেক খান তুফানির কথায়। তিনি বলেন, ‘আমি তো সামান্য শ্রমিক নেতা। আমার কথা কয়জন শোনে? গাড়ি রাখতে না করি। ড্রাইভাররা তারপরেও খামখেয়ালি কইরা রাখে। তাদের কথা, তারা দূরে নিয়া গাড়ি রাখতে পারব না। আর আশেপাশেও গাড়ি রাখার কোনো জায়গা নাই।’
মূলত রাস্তার পাশে বৃক্ষরোপণ ও তা দেখাশোনার দায়িত্বে থাকেন জেলা প্রশাসক। গাছের পরিচর্যা ও পাহারার জন্য প্রশাসনিকভাবে লোক নিয়োগ দেয়া হয়। এই ১০ কিলোমিটারের দায়িত্বে আছেন মফিজ মাস্টার। পাহারাদার থাকতেও কিভাবে বিনষ্ট হলো এতগুলো গাছ?
প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে দমিয়ে রাখা হয়েছে পাহারাদারকে। পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে ভুলতে বাধ্য হয়েছেন গাছের কথা-এমন দাবি মফিজ মাস্টারের।
ঢাকাটাইমসকে এই পাহারাদার বলেন, ‘ট্রাক দিয়া ধাক্কা দিয়ে গাছগুলা ভাইঙা ফালায়। আমি কয়েকবার কইতে গেছি আমারে হুমকি দিছে। মাইরা ফালাইব। আমারও তো পরিবার আছে, ওদের কথাও তো ভাবতে হবে।’
‘সব ঝামেলা এই গাবতলীতে। সুইচগেইটের (‘স্লুইসগেট) পর থিকা কেল্লার মোড় পর্যন্ত দেহেন। কোনো গাছে কোনো সমস্যা পান কি না।’
বাকি আট কিলোমিটারের গাছ স্বাভাবিক থাকলেও অস্বাভাবিক হারে নষ্ট হয়ে গেছে গাবতলীর দুই কিলোমিটার এলাকার গাছ। গাছের এই ক্ষতির কারণ হিসেবে স্থানীরা চিহ্নিত করেছেন ট্রাকের অবৈধ পার্কিং ও অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বালুর গদিকে।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা বন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করেছি। তারা বিষয়টি দেখবেন।’
