চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী লারিসাসহ ৭৯ জন সাঁতারু। ছোট্ট লারিসা সফল হলে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়া কনিষ্ঠ সাঁতারু হবে সে মহান বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এবার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিতে সাঁতার দিচ্ছেন। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে এ স্রোত ধারাটির নাম ‘বাংলা চ্যানেল’।

আজ সোমবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহ্পরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্রসৈকত থেকে এই সাঁতার শুরু হয়েছে। ১৬ দশমিক এক কিলোমিটার দূরত্বের বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়ে সাঁতার শেষ হবে সেন্টমার্টিন দ্বীপে।

বাংলা চ্যানেল সাঁতার প্রতিযোগিতার এ দলে রয়েছেন গত তিনবার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়া বিদেশি সাঁতারু সিক্স ফিন্ডার। এছাড়া মোহাম্মদ শোয়াইব নামে ৬৯ বছরের বৃদ্ধ ও পার্বত্য এলাকা থেকে আসা উক্যচিং মার্মা উজ্জ্বল।

পানিতে ডুবে মৃত্যু থেকে রক্ষা পেতে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বারোপ করতে এ সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা জানান, স্পোর্টস অ্যাডভেঞ্চারকে উৎসাহিত করে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি এই চ্যানেলকে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচয় করার লক্ষ্যে ১৩ বছর ধরে এই আয়োজন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের তরুণ ও যুব সমাজকে মানসিক ও সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচাতে সুস্থ খেলাধুলা এবং অ্যাডভেঞ্চার ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে।

ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও অফরোড বাংলাদেশের আয়োজনে ট্যুরিজম বোর্ড, পর্যটন করপোরেশন ও কোস্টগার্ডের সহায়তায় এডিবল ওয়েল লিমিটেডের ব্র্যান্ড ‘ফরচুন’ সাঁতার প্রতিযোগিতায় পৃষ্টপোষকতা করছে।

রাজধানী একটি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সৈয়দা লারিসা রোজেন। তার বয়স ১০ বছর চার মাস। অন্যদের মতো তার সঙ্গে রয়েছেন মা, বাবা ও বড় ভাই। তবে লারিসার সঙ্গে সাঁতারে অংশ নিচ্ছেন বাবা সৈয়দ আক্তারুজ্জামান ও বড় ভাই সৈয়দ আরবিন আয়ান। রেসকিউ দলের সঙ্গে নৌকায় রয়েছেন মা।

কেমন লাগছে, এমন প্রশ্নের জবাবে লারিসা বলেন, ‘একটু ভয় ভয় করছে। তবে আশা করি আমি পারব। ইচ্ছা শক্তি থাকলে সবই সম্ভব। সকলেই আমার জন্য দোয়া করবেন।

ষড়জ অ্যাডভেঞ্চারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিপটন সরকার জানান, মহান বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এবারে সাঁতার হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৭ বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন তিনি। আজ সফল হলে টানা ১৮বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার এককভাবে রেকর্ড গড়বেন বলে আশা করছেন। এটি পাড়ি দিতে ৪/৫ ঘণ্টা সময় লাগে।

তিনি জানান, এবার সর্বোচ্চ ৭৯ জন সাঁতারু অংশ নিচ্ছেন। বিশেষ কারণে একজন উপস্থিত হতে পারেনি। গত বছর ৪৩ জন সাঁতারু অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ৩৯ জন সফল হয়েছিলেন।

লিপটন সরকার জানান, এই সাঁতার আন্তর্জাতিক রীতি মেনে পরিচালনা করা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এবারও একজন বিদেশি সাঁতারু অংশ নিচ্ছেন। আমরা বাংলা চ্যানেল সাঁতারকে আন্তর্জাতিক করতে পেরেছি। গতবারের চেয়ে এবার প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক সাঁতারুর অংশগ্রহণ বলে দিচ্ছে বাংলাদেশে দূরপাল্লার সাঁতার জনপ্রিয় হচ্ছে।

২০০৬ সালের ১৪ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো বাংলা চ্যানেল সাঁতার অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেবার সাঁতারে অংশ নিয়েছিলেন লিপটন সরকার, ফজলুল হক সিনা ও সালমান সাইদ।a

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031