গুলশান থানা পুলিশ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেনি ।

রবিবার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর হাকিম মো. নুর নবী আগামী ১২ ডিসেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করেন।

এর আগে গত ১২ অক্টোবর মামলাটিতে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ১১ নভেম্বরের মধ্যে গ্রেপ্তার করা সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গুলশান থানাকে নির্দেশ দেয়া হয়।

বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর মানহানির এই মামলা করেন। ওইদিন  আদালত তেজগাঁও থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান মামলাটিতে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। যা গত ২২ মার্চ আমলে নিয়ে আসামি খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।

খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমানকে আসামি করে করা মামলায় বলা হয়েছে,১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বর ক্ষমতা দখল করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছেন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসলে তাকে হুমকি তার বাবার বাড়িতে পর্যন্ত ঢুকতে দেয়া হয়নি।

এ ছাড়া খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে স্বাধীনতাবিরোধী আলবদর রাজাকারদের হাতে মন্ত্রিত্ব তুলে দেন। স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটিয়েছেন তিনি।

মামলাটি করার পর এ বিষয়ে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রতিবেদন চায় পুলিশ।

থানার পক্ষ থেকে জমা দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির জয়ের পর চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সরকার গঠন করেন। এতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের দোসর জামায়াতের দুই নেতাকে তিনি মন্ত্রী বানান। এমপিও হন কেউ কেউ। পরে এদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।

এদের মধ্যে খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী এবং আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মুত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে মন্তব্য করে প্রতিবেদনে বলা হয়। তারা ক্ষমতায় থাকাকালে মন্ত্রিত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি এবং গাড়িতে ব্যবহার করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন স্বাধীনতাবিরোধীদের তার মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়ে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকার মর্যাদাকে ভুলন্ঠিত করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত।

এছাড়া প্রচলিত আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অব্যাহতির প্রদানের সুপারিশ করা হয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031