ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের আটটি লোহার দানবাক্স ৩ মাস ২০ দিন পর আজ শনিবার আবারও খোলা হয়েছে কিশোরগঞ্জ শহরের । এ সময় সিন্দুকগুলো থেকে ১৬ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। টাকা গণনার কাজে রুপালি ব্যাংকের এজিএম ও অন্যান্য কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা আইসিটি) মো. গোলাম মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রতি তিন মাস পর পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এবার ৩ মাস ২০ দিন পর সেগুলো খুলে ১৬ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে।

মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ৮টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দান সিন্দুক খোলা হয়েছে। দান সিন্দুকগুলো খুলে ১৬টি বস্তায় টাকাগুলো আনা হয়েছে গণনার জন্য। এখন চলছে টাকা গণনার কাজ।

এর আগে সর্বশেষ ১২ মার্চ দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল।

মসজিদের খতিব, এলাকাবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন সূত্রে জানা যায়, এই মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এখানে দান করে থাকেন।

সূত্রমতে, এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝপথে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে সব ধর্মের লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। ওই পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী।

কিন্তু ওই সাধকের দেহাবসানের পর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে এলাকা এমনকি দেশের দূর-দূরান্তের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। মানত কিংবা দান খয়রাত করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের নারী-পুরুষ মানত নিয়ে আসেন এই মসজিদে। তারা নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন।

বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের ঢল নামে। আগতদের মধ্যে মুসলিমদের অধিকাংশই জুমার নামাজ আদায় করেন মসজিদে। আর এ ইতিহাস প্রায় আড়াইশ বছরেরও অধিক সময়ের বলে জানা যায়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031