২০-২৫টি চালানের হদিস পাচ্ছে না কাস্টম কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি হওয়া পণ্যের।

২০১৬ সালের ৩০ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত এই ১৭ মাসে বিল অব লেডিং দাখিল করার পরও বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়নি এমন ৫ হাজার ৫৮৪টি পণ্য চালানের তালিকার তদন্তে নেমে এমন তথ্য পেয়েছে কাস্টম হাউস।

কাস্টমস কমিশনার ড. এ কে এম নুরুজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন। হসিদ না পাওয়া ২০ থেকে ২৫টি চালানে এক হাজারের বেশি কন্টেইনার মিসিং থাকতে পারে বলে তিনি জানান।
তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কন্টেইনারের হদিস না মেলার কোনও কারণ নেই। যদি এগুলো নিলাম অথবা ধ্বংস করা না হয় তাহলে আমদানি পণ্য বোঝাই কন্টেইনারগুলো বন্দরের ভেতরেই থাকবে। সুনির্দিষ্ট কাগজপত্র পেলে তারা এগুলো বের করে দিতে পারবেন।

তবে এ ঘটনা প্রথম নয়, এর আগেও এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আমদানি হওয়া ৪৬৫টি চালান বন্দর কর্তৃপক্ষ কাগজে কলমে কাস্টমসকে বুঝিয়ে দিলেও সরেজমিনে এসব পণ্যের কোনও অস্তিত্ব খুঁজে পাননি শুল্ক কর্মকর্তারা।

ড. এ কে এম নুরুজ্জামান বলেন, ‘বিল অব এন্ট্রি দাখিল না হওয়া চালানের তালিকা তদন্ত করতে গিয়ে আমরা ২০ থেকে ২৫টি চালানের তথ্য পেয়েছি যেগুলো মিসিং আছে। এগুলো বন্দরের ভেতরেই থাকার কথা। আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানতে চাইবো এই মালামালগুলো কীভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে যে তথ্য আছে আমরা তাতে নিশ্চিত হয়েছি পণ্যগুলোর জন্য সরকার রাজস্ব পায়নি। এগুলো নিলামে বিক্রি করা হয়নি এবং ধ্বংসও করা হয়নি। অন্য কোনও মাধ্যমে এগুলো খালাস করা হয়েছে কিনা সেই তথ্যও আমাদের কাছে নেই।’

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘হদিস না মেলা এসব কন্টেইনারের নম্বরসহ সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে এগুলো আমরা খুঁজে বের করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কাস্টম হাউসের কাছে মিসিং কন্টেইনারের তালিকা চেয়েছি। যদি ডেলিভারি না হয়ে থাকে, অকশন না হয়ে থাকে তবে কন্টেইনারগুলো বন্দরের ভেতরে অবশ্যই আছে। তদন্ত করা ছাড়া বা খুঁজে দেখা ছাড়া এগুলো নিশ্চিত হওয়া যাবে না।’

গত ৩১ জানুয়ারি বিল অব লেডিং দাখিলের পর বিল অব এন্ট্রি দাখিল না হওয়া ৫ হাজার ৫৮৪টি চালানের তালিকা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে কাস্টম হাউস। সহকারী কমিশনার জেবুন্নেসা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিল অব এন্ট্রি দাখিল না হওয়া ওইসব চালানের তালিকা অনুযায়ী তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অতিরিক্ত কমিশনার-২ মোহাম্মদ শফি উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- যুগ্ম কমিশনার-১ মোহাম্মদ হাসমত আলী, ডেপুটি কমিশনার মো. বাবুল ইকবাল ও সহকারী কমিশনার মো. মিজানুর রহমান।

ওই চিঠিতে কমিটিকে এক মাসের মধ্যে উক্ত চালানের বর্তমান অবস্থাসহ অন্যান্য বিষয়ের ওপর মতামত সম্বলিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া এ বিষয়ে নেওয়া কার্যক্রম ও অর্জিত ফলাফল সাপ্তাহিক ভিত্তিতে প্রতি রবিবার প্রতিবেদন আকারে কাস্টম কমিশনারের কাছে প্রদান করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত কমিশানার-২ মোহাম্মদ শফি উদ্দিনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031