বসবাস করছেন কয়েক হাজার মানুষ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ৫৮টি ভবন যখন তখন ভেঙে পড়ার অবস্থায় রয়েছে। স্কুল, বাণিজ্যিক ভবন ও আবাসিক ভবনসহ এসব ভবনে । দিনের পর দিন চরম ঝুঁকিতে থাকা ভবনগুলো ভাঙ্গার কোন উদ্যোগই কোন পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে না। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বেশ কয়েক বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা করলেও এগুলো ভাঙ্গার ব্যাপারে কোন উদ্যোগই গ্রহণ করেনি।

সূত্র বলেছে, চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রায় ৯০টির মতো ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল সিডিএ। এসব ভবনের তালিকাও সিডিএ থেকে সিটি কর্পোরেশনকে দেয়া হয়। পরবর্তীতে যাচাই বাছাই করে কয়েকটি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। আবার কয়েকটি ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী ৫৮টি ভবন যখন তখন পড়ার মতো অবস্থায় রয়েছে। এসব ভবনে এখনো অবস্থান করছে কয়েক হাজার মানুষ।

সিডিএ’র একজন কর্মকর্তা বলেন, জরিপ করে মহানগরীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন ভবনগুলোর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ভবনগুলোর অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা যাচাই বাছাই করে দেখেছি। এখন এগুলো যত তাড়াতাড়ি ভেঙ্গে ফেলা হবে ততই মঙ্গল। তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডে ৬টি, দেওয়ানবাজার ওয়ার্ডে ৬টি, ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ডে ৪টি, আলকরণ ওয়ার্ডে ৬টি, বক্সিরহাটে ৬টি, মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে ৩টি, উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে ১টি, উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে ৪টি, পাঠানটুলি ওয়ার্ডে ২টি, শুলকবহর ওয়ার্ডে ৭টি, দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ১টি, এনায়েত বাজার ওয়ার্ডে ৪টি, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ১টি, চকবাজার ওয়ার্ডে ১টি, জামালখান ওয়ার্ডে ৩টি এবং মহানগরীর বাইরে ৩টি। মহানগরীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো যে কোন সময় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটাতে পারে। কিছু ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে মামলা থাকায় সিটি কর্পোরেশন কিছু করতে পারছে না।

প্রকৌশলীরা এসব ভবন আরো অনেক আগে ভেঙ্গে ফেলার পরামর্শ দিলেও তা না ভাঙ্গায় জনমনে অসন্তোষ রয়েছে। ভবনগুলো ভেঙ্গে পড়লে শুধু ভবনের বাসিন্দারাই নয়, আশপাশের মানুষ এবং ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট একজন প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভবন মালিকদের অসহযোগিতা এবং কোন কোন ক্ষেত্রে মামলার কারনে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। নগরীর বক্সিরহাটের নজুমিয়া মার্কেটের সামনের জরাজীর্ণ ভবনটি দেখলেই ভয় লাগে। অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভবনটিতে শত শত লোকের আনাগোনা। আশেপাশেও কয়েক হাজার মানুষ। এই ভবনটি ভাঙ্গার জন্য ১৯৮৮ সাল থেকে চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হচ্ছে না বলেও উল্লেখ করা হয়। নজু মিয়া ওয়াকফ স্টেটের মালিকানাধীন এ একটি ভবনই শুধু নয়, নগরীর এ ধরনের অন্যান্য ভবনগুলোর অবস্থাও বেহাল। যে কোন সময় বড় ধরনের অঘটন ঘটার আশংকা ভবনের বাসিন্দাদের সারাক্ষণই তাড়া করে। তবুও স্বল্প ভাড়া এবং কোন কোন ক্ষেত্রে দখল স্বত্ত্ব টিকিয়ে রাখতে ভবনগুলো ছাড়ছেন না বাসিন্দারা। সিটি কর্পোরেশন থেকে আইনী প্রক্রিয়ায় ভবনগুলো ভাঙ্গা হলে বড় ধরনের অঘটন থেকে মানুষ রক্ষা পাবে বলেও সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করেছেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031