স্বামীর হাতে নির্যাতনের শিকার হন দেশের ৮০.২ শতাংশ নারী । তবে নির্যাতনের এ হার আগের তুলনায় কমে এসেছে। ২০১১ সালে এ হার ছিল ৮৭.১ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশনের অডিটোরিয়ামে ‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন (ভাউ) সার্ভে ২০১৫’ শীর্ষক জরিপে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যকার সময়ের তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন করে বিবিএস। মোট ২১ হাজার ৬৮৮ জন নারী এই জরিপে অংশ নেন। বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদের সভাপতিত্বে প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। এতে আরো বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, ইইউ অ্যাম্বাসেডর পিয়ারে মাদুরে প্রমুখ।
বিবিএসের জরিপে বলা হয়, শারীরিক নির্যাতন ছাড়া দেশে সার্বিকভাবে নারী নির্যাতনের হার কমেছে। বর্তমানে বিবাহিত নারীদের ৮০.২ শতাংশ কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার। বিবিএস এবার দ্বিতীয়বারের মতো জরিপ করল। এর আগে ২০১১ সালে প্রথম জরিপ পরিচালনা করে। প্রথম জরিপ মতে, বিবাহিত নারীদের ৮৭.১ শতাংশ কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার ছিল। স্বামী বা যেকোনো সঙ্গীর দ্বারা নির্যাতনের হারও কমেছে। আগে এ হার ছিল ৭৪.৪ শতাংশ। এখন তা ৭২.৬ শতাংশ। এদের মধ্যে সঙ্গীর নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণের কারণে নির্যাতনের শিকার ১৫ শতাংশ। শারীরিক, যৌন, অর্থনৈতিক, নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ এবং আবেগীয় নির্যাতনকে জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জরিপে ২১ হাজার ৭৭৫ জন নারীর সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। মাঠপর্যায়ে ২০১৫ সালের ১৩ থেকে ২২শে আগস্ট তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এখন পর্যন্ত নারী নির্যাতন নিয়ে আলাদা করে জরিপ হচ্ছে। কিন্তু পুরুষেরাও নির্যাতনের শিকার হয় কি না, তা-ও দেখতে হবে। বিবিএস পরবর্তী জরিপ করতে হবে নারী ও পুরুষের নির্যাতন নিয়ে। তিনি বলেন, আগে মেয়ে সন্তান হলে ছেলে সন্তানের জন্য পুরুষেরা একাধিক বিয়ে করতেন। এখন মেয়ে সন্তানের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। এখন নারী উপার্জন করছে। শিক্ষার হার বাড়ার সঙ্গে নারী নির্যাতন কমার সম্পর্ক আছে। শুধু নারীদের নয়, পুরুষদেরও সচেতন করতে হবে।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, নারী নির্যাতনের হার ধীরে ধীরে কমছে। তবে এতে খুশি হওয়ার কারণ নেই। শিক্ষা ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন না হলে পুরুষ নারীকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালায়। নারী নির্যাতন কমানো সম্ভব না হলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031