বাচ্চা কাঁদছিল। আর ছোট বোন পাশের বাড়িতে দেখছিল ভারতীয় সিরিয়াল ‘কিরণমালা’। ক্ষুব্ধ বড় বোন সেখানে গিয়ে মারধর শুরু করলে পালাতে গিয়ে ইটের ওপর পড়ে প্রাণ হারায় তানজিলা খাতুন নামের ওই কিশোরী।
বুধবার সকালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার আঁচুয়া কসাইপাড়া গ্রামে ঘটে এ ঘটনা।
১২ বছরের তানজিলা উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের জেনারুল ইসলামের মেয়ে। বড় বোনকে আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে ‘কিরণমালা’ দেখা নিয়ে দুটি ঘটনায় এক শিশু ও অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়। সাতক্ষীরায় বাড়ির লোকজন যখন কিরণমালা দেখায় মগ্ন, তখন এক শিশু সবার অলক্ষ্যে পুকুরে পড়ে মারা যায়। আর হবিগঞ্জের এক বাজারে কিরণমালা দেখা নিয়ে দুই গ্রামের মানুষের দুই দিন ধরে সংঘর্ষে আহত হয় অর্ধশতাধিক।
আজ বুধবারের গোদাগাড়ির ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় লোকজন জানান, বেশ কিছুদিন আগে তানজিলার মা হেরোইনসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। এরপর থেকে কিশোরী তানজিলা আঁচুয়া কসাইপাড়া গ্রামে তার দুলাভাই হারুন বাবুর বাড়িতে থাকত।
বুধবার সকালে ওই কিশোরী পাশের বাড়িতে ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ‘কিরণমালা’ দেখছিল। আর তার বড় বোন শিল্পী খাতুন (২০) ব্যস্ত ছিলেন সাংসারিক কাজে। এ সময় তার শিশুসন্তান কোলে ওঠার জন্য কাঁদছিল। কিন্তু তানজিলা বাড়িতে না থাকায় শিল্পী তার ওপর ক্ষিপ্ত হন। পরে তিনি পাশের বাড়ি গিয়ে তানজিলাকে মারতে শুরু করেন।
একপর্যায়ে তানজিলা পিটুনি থেকে বাঁচার জন্য ছুটতে গিয়ে ইটের ওপর পড়ে। এতে সে বুকে আঘাত পেলে তাকে গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বুধবার বেলা দুইটায় গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিফজুল আলম মুন্সি বলেন, ‘এটি ঠিক হত্যা নয়, অপমৃত্যু। আমরা ওই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়েছি।’
লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে কি না, জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত হলে পরে জানানো হবে।’
ওসি জানান, বড় বোন শিল্পী খাতুনের ধাওয়া খেয়ে পড়ে গিয়ে তানজিলার মৃত্যু হওয়ায় তাকে আটক করা হয়েছে। তবে তার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
