বাংলাদেশ উগ্রবাদী সহিংসতা মোকাবেলায় গ্লোবাল কমিউনিটি এঙ্গেজমেন্ট এন্ড রেজিলিয়েন্ট ফান্ড (জিসিইআরএফ)-এর আওতায় ১০ লাখ ডলারের বেশি অর্থ পাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের উগ্রবাদী সহিংসতা মোকাবেলা কার্যক্রম (সিবিএ)-এর ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী জাস্টিন সিভারেল এ কথা জানিয়েছেন।

উগ্রবাদ মোকাবেলায় বিশ্বের ৬০টি সিটিকে সিটি নেটওয়ার্ক এর আওতায় নেয়া হয়েছে। তারমধ্যে বাংলাদেশের ঢাকা সিটি দক্ষিণ রয়েছে বলে জানান এই উর্ধতন কর্মকর্তা।

বুধবার দুপুরে নিউইয়র্কস্থ ফরেন প্রেস সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান তিনি।

শুক্রবার দৈনিক নয়া দিগন্ত অনলাইন ভার্সনে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি আরটিএনএনের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:

ব্রিফিংয়ের শুরুতেই জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় বিশ্বনেতাদের সাফল্যের কথা তুলে ধরে সিভারেল বলেন, ২০১১ সালে গ্লোবাল কাউন্টারিং টেরোরিজম ফোরাম গঠিত হয়। যে ফোরাম যুক্তরাষ্ট্রের জঙ্গিবাদ মোকাবেলার উদ্যোগগুলোকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের ৬০টি বেশি দেশ বিদেশি সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে এবং শাস্তি প্রদান করতে নতুন আইন করেছে কিংবা আইনি সংস্কার এনেছে।

তিনি আরো জানান, বিশ্বের ৫০টি দেশ ইতোমধ্যে বিদেশি সন্ত্রাসী এবং তাদের সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে কিংবা বিচার করেছে।

জঙ্গিবাদী সহিংসতা মোকাবেলায় স্থানীয় সিভিল সংগঠনগুলোকে সহায়তা করতে গ্লোবাল কমিউনিটি এঙ্গেজমেন্ট এন্ড রেজিলিয়েন্ট ফান্ড (জিসিইআরএফ)- এর আওতায় তিনটি দেশকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশ। আর বাকি দু’টি দেশ হচ্ছে নাইজেরিয়া ও মালি।

আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এ্ই ফান্ডে অতিরিক্ত ৩০ লাখ ডলার প্রদান করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই সমন্বয়কারী।

এই প্রতিনিধি এসময় জানতে চান, আমরা সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা বাংলাদেশে দেখতে পেয়েছি। প্রত্যেকটি ঘটনারই দায় দায়িত্ব আইসিসের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার এর প্রত্যেকটি ঘটনার জন্য বিরোধী দলকে দোষারোপ করছে এবং আমরা আরো দেখতি পেয়েছি যে বাংলাদেশের এসব ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে জন কেরি প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট ওবামা পেন্টাগনে ভাষণ দেবার সময় বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করেছেন এবং সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরি বাংলাদেশ সফর করেছেন। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে জঙ্গিবাদের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের অংশীদারী রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র কোন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে?

এ প্রশ্নের জবাবে জাস্টিন সিভারেল বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যেটা আপনি উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছেন। জঙ্গিবাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা দেশটিকে সহযোগিতা করতে বিভিন্ন অঙ্গনে কাজ করছি। আইনশৃংখলা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আমরা সহযোগিতা করে যাচ্ছি। যাতে করে তারা জঙ্গিবাদের হুমকি চিহ্নিত করতে পারে এবং পাশাপাশি এ হুমকি তছনছ করে দিতে পারে।

তিনি আরো জানান, আমরা বাংলাদেশের আরেকটি সেক্টর নিয়ে কাজ করছি যেটাকে বলে ‘কমিউনিটি অরিয়েন্টেড পুলিশিং’।

পুলিশ যাতে করে কমিউনিটির সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে পারে সেজন্য পুলিশের জন্য নতুন টুল চালু করতে বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ কার্যকর জঙ্গিবাদী সহিংসতা মোকাবেলার জন্য কমিউনিটির নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সম্পর্ক অত্যন্ত জরুরি।

তিনি আরো জানান, গ্লোবাল কমিউনিটি এঙ্গেজম্যান্ট এন্ড রেজিলিয়েন্ট ফান্ডের প্রথম অর্থ সহযোগিতা পাওয়া দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। এ অর্থ স্থানীয় সংগঠনগুলো যাতে জঙ্গিবাদী সহিংসতা মোকাবেলা করার জন্য কাজ করতে পারে সেজন্য খরচ করা হবে। আর এসব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সাথে জাতিসঙ্ঘ সম্মেলন চলাকালে আমার ব্যক্তিগত বৈঠক হয়েছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, উগ্রবাদী সহিংসতা মোকাবেলায় বিশ্বের ৬০টি শহরে মধ্যকার যে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশের ঢাকা দক্ষিণ সিটি। সিটি নেটওয়ার্কভূক্ত অন্যতম শহরগুলো হচ্ছে – আনতালিয়া (তুরস্ক), বৈরুত (লেবানন), লন্ডন ও বার্মিংহাম (ইউকে), বুয়েন্স আয়ার (আর্জেন্টিনা), কেলি (কলম্বিয়া), আটলান্টা ও নিউ ইয়র্ক (ইউএসএ), মুম্বাই (ইন্ডিয়া), পেশওয়ার (পাকিস্তান), মন্ট্রিল (কানাডা), তিউনিস (তিউনিসিয়া), কোপেনহেগেন (ডেনমার্ক)।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031