রোগীর নাম বিপ্লব মণ্ডল। ছাব্বিশ বছরের এ যুবক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হন কেরানীগঞ্জে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শারীরিক পরিস্থিতি নাজুক হওয়ায় চিকিৎসকরা অক্সিজেন মাস্ক লাগায় তার মুখে। মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো অবস্থায় হাসপাতালের ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এদিকে হাসপাতালের ঝাড়ুদার সুমন গতকাল বিকালে ঝাড়ু দিতে যান হাসপাতালের সে ওয়ার্ডে। ঝাড়ু দেয়ার এক পর্যায়ে তিনি নাড়াচাড়া শুরু করেন বিপ্লব মণ্ডলের মুখের অক্সিজেন মাস্ক। তারপর নিজেই বিপ্লব মণ্ডলকে মৃত ঘোষণা করেন সে সুইপার। সুইপার রোগীর অক্সিজেন মাস্ক নাড়াচাড়া ও রোগীতে মৃত ঘোষণা করায় প্রশ্ন তোলেন বিপ্লব মণ্ডলের স্বজনরা। তারা বলেন, কিছুক্ষণ আগে যে লোক মেঝে ঝাড়ু দিচ্ছিলেন তিনি চিকিৎসক হলেন কিভাবে? এরপর সুইপার সুমনকে তাৎক্ষণিক উত্তম মধ্যম দেয় রোগীর স্বজনরা। পরে হাসপাতালের আনসারেরা তাকে উদ্ধার করে পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যায়। গতকাল বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটে। এ সময় ঢামেক হাসপাতালের বাইরে অনেক ওই হাসপাতালে ভর্তিরত রোগীর স্বজনেরা ‘সুইপার কেন চিকিৎসক, জবাব চাই, দিতে হবে’ বিভিন্ন স্লোগান দেন। নিহত বিপ্লবের বাবা বিনোদ মণ্ডল কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান, গতকাল বিকালে তার ছেলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হলে ঢামেক হাসপাতালের ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে ইনজেকশনের নাম লিখে দিয়ে তা দ্রুত কিনে আনতে বলেন। এ সময় সুমন নামের এক যুবক এসে বিপ্লবের মুখে অক্সিজেনের মুখোশ চেপে ধরেন এবং জানান সুমন মারা গেছে। কিছুক্ষণ আগে ওই যুবক মেঝে ঝাড়ু দিচ্ছিলেন। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের পরিচালক এসআই বাচ্চু মিয়া জানান, ওই যুবক পাঁচ মাস আগে হাসপাতালের ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে এক ওয়ার্ড মাস্টারের তদবিরে চাকরি পান। সেখানে চিকিৎসক না থাকার কারণে ওই রোগী তার কাছে যান। তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031