জনপ্রতি ৪০টি করে ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে টেলিটকের সিম নিবন্ধনের নামে। ‘যত বেশি ফিঙ্গার প্রিন্ট আমেরিকা যাওয়ার সুযোগ তত বেশি’- এমন কথা বলে একটি প্রতারক চক্র এলাকার শতাধিক লোকের কাছ থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে ৪০ টির বেশি করে ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়েছে। এ নিয়ে এলাকার আতঙ্ক বিরাজ করছে।

তাহিরপুর উপজেলা সদরের চিকসা গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে পারভেজ (২০) ও আব্দুল আলীর পুত্র হাফিজুরের (২২) নেতৃত্বে এই ফিঙ্গার প্রিন্টগুলো নেয়া হয়। তাদের প্রতারণার বিষয়টি ধরা পরার পর এ নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

চিকসা গ্রামের হেলিম মিয়া, আমির হোসেন, মোফাজ্জল হোসেন, মাজহারুল, শিল্পী আরা, ছালেহ আহমদ ও মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে সিম নিবন্ধন নিয়ে কথা হয়।

তারা বলেন, আমেরিকা নেয়ার কথা বলে এক এক জনের কাছ থেকে ৪০টির বেশি ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়েছে পারভেজ ও হাফিজুর। তারা মানুষকে বলেছেন, ‘যারা ফিঙ্গার প্রিন্ট দেবেন তাদের মধ্যে থেকে পরে লটারির মাধ্যমে কয়েক জনকে আমেরিকায় পাঠানো হবে। যত বেশি ফিঙ্গার প্রিন্ট দিবেন আমেরিকা যাওয়ার সুযোগ তার তত বেশি হবে।’ পরে আমরা ওদের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারি। ভয় হচ্ছে- আমাদের নামে সিম তুলে এগুলোর অপব্যবহার করতে পারে ওরা। এমন কি এসব সিম নাশকতাকারী বা অন্য কোনো অপরাধীর কাছে চলে যেতে পারে।

এই দুই ব্যক্তির সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদেরও যোগসাজস রয়েছে বলে অনেকের অভিযোগ। কেউ কেউ এদের সঙ্গে জঙ্গি কানেকশন থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে।

সম্প্রতি এলাকার লোকজন সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে তাদের দুই জনকে ধরে স্থানীয় চেয়ারম্যানের জিম্মায় দেয়। একই সঙ্গে দুই প্রতারকের কাছ থেকে তিন’শ টেলিটক সিম, ফিঙ্গার প্রিন্টের মেশিন ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয় এবং এগুলোও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিনের কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দেনদরবারও হয়। পরে চেয়ারম্যান নিজে দায়িত্ব নিয়ে পারভেজকে ছেড়ে দেন। এর পর থেকেই তারা দুই জনই গা-ঢাকা দিয়েছে। পরে ফোন দিয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ ফোন ধরেনি।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিনের কাছে জানতে চাইল তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই জনের কাছ থেকে ল্যাপটপ, ফিঙ্গার প্রিন্টের মেশিন ও ৩শ টেলিটক সিম আমার অফিসে জমা রয়েছে। বিষয়টি নিস্পত্তির চেষ্টা চলছে।

এ প্রসঙ্গে চিকসা গ্রামের সমাজসেবক আবুল ইসলাম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধী কাদের মোল্লা, মীর কাসেম আলীর ফাঁসি হওয়ার পর এই পারভেজ ও হাফিজুরের নেতৃত্বে চিকসা গ্রামে গায়েবি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরাই মানুষ জন জড়ে করে এই যুুদ্ধাপরাধীদের রুহের মাগফিরাত কামোনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শহিদুল্লাহ বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি, তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

Share Now
November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930