আজ দক্ষিণ এশীয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার ১৭তম আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হচ্ছে । দক্ষিণ এশিয়ার নয়টি দেশের জোটের মধ্যে শ্রীলঙ্কা ছাড়া অন্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন। রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বিশেষ অতিথি থাকবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। গতকাল রমনায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থার চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ। বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খান এবং কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের তত্ত্বাবধানে বিটিআরসি এবং এশিয়া-প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটি (এপিটিএ) এই সম্মেলনের আয়োজন করছে। এর আগে বাংলাদেশে তিন বার এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও ইরানসহ দেশগুলোর টেলযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান, টেলিকম অপারেটর, উদ্যোক্তা, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, টেলিকম ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের প্রায় এক শ’ প্রতিনিধি অংশ নেবেন। আয়োজক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান এই সম্মেলনে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, সার্ক সম্মেলন বোধ হয় এবার হবে না, সেই পরিপ্রেক্ষিতে সার্কের মতই এই ভূমিকায় আমরা একটা সম্মেলন করতে পারছি এটা কিন্তু আমাদের একটা কৃতিত্বের। তবে শেষ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কাও এতে অংশগ্রহণ করতে পারে বলে জানান বিটিআরসি সচিব সরওয়ার আলম। বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানান, এই অঞ্চলে বিশেষ করে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে রেগুলেশন করতে গিয়ে যেসব সমস্যা দেখা যায় সেগুলোকে আঞ্চলিক সমঝোতার ভিত্তিতে সমাধান করার জন্য এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একেক অঞ্চলের সমস্যা একেক ধরনের হয়। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি কো-অর্ডিনেশন, বিভিন্ন ধরনের স্ট্যান্ডার্ড তৈরি, রেগুলেটরি ট্রেন্ড ইস্যুগুলো আলোচনা হবে বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন বর্তমানে জঙ্গি, ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল), বিভিন্ন ধরনের ওটিটি যেমন ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ বিভিন্ন ইস্যু তথ্যপ্রযুক্তিখাতে এই অঞ্চলে প্রভাবিত করেছে তা নিয়ে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন এবং কীভাবে বের করা যায়, আশা করছি সম্মেলনে এই ইস্যুগুলো আসবে এবং অ্যাকশন প্ল্যানের মধ্যে ঢোকাতে পারবো। তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে মোট ১১টি সেশন ও মূল্যায়ন বিষয়ক গোলটেবিলে ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্কে প্রবেশ, গুণগত মান, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি, তরঙ্গ নিয়ন্ত্রণ, ইন্টারনেট অব থিংস, পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমদাদ উল বারী। তিনি জানান, উন্নত প্রযুক্তির কারণে উন্নত দেশগুলো টেলিযোগাযোগখাতে হিমশিম খাচ্ছে, এ বিষয়ে টেলিকম অপারেটরদের মতামত নেব। পাশাপাশি বাংলাদেশের মোবাইল সিমের জন্য বায়োমেট্রিকের সফলতা তুলে ধরা হবে। এসএটিআরসি’র বর্তমান চেয়ারম্যান ও ভারতের টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটির চেয়ারম্যান আর এস শর্মার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এপিটিএ’র মহাসচিব এরিওয়ান হাওরাংসি, বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী এবং বিটিআরসি চেয়ারম্যান বক্তব্য রাখবেন। সম্মেলনে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে রোমিং কলরেট কমানোর বিষয়েও আলোচনা হবে বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান। আন্তর্জাতিক এই সম্মেলন ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান বিটিআরসি মহাপরিচালক (এসএম) কর্নেল মো. নাসিম পারভেজ। তিনি জানান, সম্মেলনে কাভার এবং ওভার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থা আইটিইউ এবং এশিয়া প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটির উদ্যোগে ১৯৯৭ সালে এসএটিআরসি নামে ফোরাম গঠিত হয়। এই সংস্থা বেতার তরঙ্গ সমন্বয়, নিয়ন্ত্রক প্রবণতা, টেলিযোগাযোগ উন্নয়নে কৌশল এবং টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে কর্মকৌশল নির্ধারণ করে থাকে। আর সদস্য দেশগুলোর স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবছর এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031