দেশের বাজারে ফরমালিনের আগ্রাসন এমন পর্যায়ে গেছে যে, মাছের বাজারে মাছি নেই, মাছিরাও আজ ভয় পাচ্ছে বাজারে যেতে। এমন মন্তব্য করেছেন সংসদে বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ। তিনি বলেছেন, বাজারে এখন কোনো খাদ্যদ্রব্যই বাদ যাচ্ছে না ফরমালিন থেকে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের চলমান অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এ কথা বলেন রওশন এরশাদ।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে রওশন এরশাদ বলেন, ‘সোনার বাংলা গড়বেন? কাকে নিয়ে সোনার বাংলা গড়বেন? সকলেই তো ফরমালিনের প্রাদুর্ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। হিসাবমতে, এ বছর খোলা বাজারে ফরমালিন বিক্রি হয়েছে ৬২৭ মেট্রিক টন। জাতীয় স্বার্থে কেন এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না?’ সরকারের প্রতি প্রশ্ন রাখেন তিনি।
অপরাধীদের বিচার না হওয়ায় ফরমালিন বিস্তার লাভ করছে উল্লেখ করে বিরোধী দলের নেতা বলেন, ‘আমরা ফরমালিনের বিরুদ্ধে বলেই যাচ্ছি। কিন্তু কোনো অপরাধীর বিচার হচ্ছে না সেভাবে। চীনে দুধে ম্যালামিন থাকায় ১৪ জন শিশু অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় সে দেশের সরকার দুজনের ফাঁসি ও একজনকে যাবজ্জীবন ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ায় সেখানে সেটা নিয়ন্ত্রণ হয়েছে বলে সংসদকে জানান তিনি।।’
দেশে ফরমালিনের কর্মকাণ্ড প্রভাবশালীরাই করছে অভিযোগ করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, সোনার বাংলা গড়তে এসব অপকর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।
শিক্ষার মানোন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে জাতীয় পার্টির এই সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষার হার বাড়ছে, জিপিএ-৫ বাড়ছে। কিন্তু শিক্ষার মান বাড়ছে না। জিপিএ-৫ পাচ্ছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে না তাদের অধিকাংশ।
প্রকৃত শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে এ সময় রওশন এরশাদ বলেন, শিক্ষার্থীদের কয়েকটি বিষয় পড়ে শুধু জিপিএ-৫ পেলে চলবে না। তাদের পুরো বই পড়তে হবে। শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে হবে।
সংসদ অধিবেশনের নিজের সমাপনী বক্তব্যে কর্মসংস্থানের ওপর জোর দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘আমাদের কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। সারা দেশে ১৬ কোটি মানুষ। এর মধ্যে কর্মক্ষম মানুষ আছে ১০ কোটি ২৮ লাখ। কিন্তু কর্মসংস্থান আছে মাত্র পাঁ৭ কোটির কিছু বেশি। দেশে অর্ধেক লোক বেকার থাকলে সোনার বাংলা গড়া সম্ভব নয়। আমাদের নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।’
