জঙ্গি ফারুক

পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল কলকাতায় গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশের তিন জেএমবি সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চলতি মাসেই ভারত যাচ্ছে । ইতোমধ্যে ভারতের পুলিশের সঙ্গে বাংলাদেশের এই প্রতিনিধি দলের কয়েক দফা আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কথাও হয়েছে। তথ্য আদান-প্রদান হয়েছে গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের বিষয়ে। পুলিশ সদর দফতরের একটি সূত্র সোমবার বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য জানিয়েছে।

সূত্রটি জানায়, কলকাতায় জেএমবি’র তিন সদস্য গ্রেফতার হওয়ার পরই বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কথাবার্তা শুরু হয়। শুরুতে ভারত জানতে চায়, গ্রেফতারকৃতরা বাংলাদেশি কিনা। বাংলাদেশের পুলিশ নাম ঠিকানা যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হয়, তারা তিনজন বাংলাদেশের নাগরিক। এদের বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশ আরও জানতে ভারতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু গ্রেফতারকৃতরা সে দেশের পুলিশের রিমান্ডে থাকায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের যেতে দেরি হচ্ছিলো। রিমান্ড শেষ হওয়ায় চলতি মাসেই বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিনিধি দলটি ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় ছয় জেএমবি জঙ্গিকে গত মাসে উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজোরাম রাজ্যের আইজল থেকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা হলো- আনোয়ার হোসেন ফারুক ওরফে এনাম ওরফে কালো ভাই, মাওলানা ইউসুফ ওরফে বক্কর ওরফে আবু খেতাব, জাহিদুল শেখ ওরফে জাফর ওরফে জবিরুল, মো. রফিকুল ওরফে মো. রুবেল ওরফে পিচ্চি, শহিদুল ইসলাম ওরফে শামীম ও আবুল কালাম ওরফে করিম। এদের মধ্যে রুবেল, জাহিদুল এবং আনোয়ার হোসেন ফারুক বাংলাদেশের নাগরিক বলে জানিয়েছে এসটিএফ। ২০১৪ সালের পর থেকে এরা পলাতক ছিলো।জঙ্গি ফারুকঅভিযোগ রয়েছে, এদের মধ্যে ফারুক ২০১৪ সালে ময়মনসিংহে ত্রিশালে পুলিশ ভ্যানে হামলা চালিয়ে ছিনতাই হওয়া আসামি। ওই সময় তাকে ধরিয়ে দিতে ৩০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ফারুক জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তার কাছে রয়েছে। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। ভারতের পুলিশের সঙ্গে আমরা আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে কথা বলেছি। তারা আমাদের জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ দেবে বলে জানিয়েছে। আমাদের একটি প্রতিনিধি দল এ মাসেই ভারত যাবে।’
গ্রেফতারকৃত জঙ্গিরা বাংলাদেশে বা ভারতে কোনও হামলার কথা ভারতের পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি জানার জন্যই আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তারা কোনও নাশকতায় অংশ নিয়েছিল কিনা, কোনও পরিকল্পনা করেছিলো কিনা- এসব বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে।’
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-ক্রাইম) হুমায়ুন কবির বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে।

উল্লেখ্য, ভারতে জেএমবির সদস্যরা গ্রেফতার হওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে না বলে জানিয়েছিলেন। কারণ, বন্দি বিনিময় নিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চুক্তি আছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031