র্যাব গত শনিবার অভিযানের তিন দিন পর তাদের হাতের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারে থাকা তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে এই সিদ্ধান্তে এসেছে। গাজীপুর ও টাঙ্গাইলে র্যাবের অভিযানে নিহত চার সন্দেহভাজন জঙ্গির মধ্যে দুইজনের পরিচয় শনাক্ত করেছে বাহিনীটি।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার উপপরিচালক রইসুল ইসলাম জানায়, দুটি আস্তানায় নিহত চারজনের মধ্যে দুইজন হলেন নওগাঁর রানীনগর উপজেলার আহসান হাবিব ও জয়পুরহাটের কালাই থানার আমিমুল এহসান।
শনিবার র্যাবের এই অভিযানের দিন পুলিশও গাজীপুরের পাতারটেক এলাকায় সন্দেহভাজন আরও একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় যেখানে নিহত হয় সাত জন। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত তিন জনের পরিচয় শনাক্তের কথা জানিয়েছেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ। আর ওই রাতে আশুলিয়ায় আরও একটি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে নব্য জেএমবি অর্থদাতা হিসেবে শনাক্ত আবদুর রহমান নিহত হন।
অর্থাৎ শনিবারের অভিযানে নিহত ১২ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ছয়জনের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছে র্যাব ও পুলিশ।
র্যাবের অভিযানে নিহত যে দুই জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে তাদেও একজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। অপরজন এক বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন।
যোগাযোগ করা হলে জয়পুরহাটের কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমার থানার অধীনে বেগুন গ্রামে আমিমুল এহসান অপু নামে এক যুবক এক বছর ধরে নিখোঁজ। ছেলে উধাও হয়ে যাওয়ার পর তার বাবা আবদুল গফফার স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবে এই আমিমই সেই আমিম কি না সেটা আমি নিশ্চিত না। এটা যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
আহসান হাবিবের বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁর রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামে বাড়ি এই তরুণের। তিনি এ বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে জানান, তার বাবা আলতাফ হোসেন র্যাব অফিসে গেছেন ছেলের বিষয়ে কথা বলতে।
আলতাফ হোসেন জানান, তার ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য বিভাগে তৃতীয় বর্ষে পড়তেন। তিনি কবে নিখোঁজ হয়েছেন বা তার জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে আগে থেকে কোনো ইঙ্গিত পেয়েছিলেন কি না, জানতে চাইলে কোনো তথ্য না দিয়ে বলেন, ‘আমি এখন ব্যস্ত আছি। পরে কথা হবে।’
গত শনিবার অক্টোবর গাজীপুর ও টাঙ্গাইলে সন্দেহভাজন দুটি আস্তানায় অভিযান চালায় র্যাব। দুটি আস্তানাতেই নিহত হয় দুই জন করে। এদের প্রত্যেকের আঙ্গুলের ছাপই নিয়েছিল র্যাব। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারে দুই জনের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
র্যাবের এই দুটি অভিযান ও পুলিশের পাতারটেক আস্তানায় নিহত ১১ জনের মরদেহই রাখা হয়েছে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে। আর আশুলিয়া অভিযানে প্রাণ হারানো আবদুর রহমানের মরদেহ রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।
