কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের যুক্তরাজ্য শাখার অর্থ লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত করতে নভেম্বর মাসে লন্ডন যাবেন । এই তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মুহাম্মদ রাজি হাসান। তিনি বৃহস্পতিবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকের যুক্তরাজ্য শাখা মুদ্রা পাচারে জড়িত কিনা, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য আগামী মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা সেখানে যাবেন।’

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে,  সোনালী ব্যাংকের যুক্তরাজ্য শাখাগুলোর অর্থ লেনদেনের বিষয় তদন্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির ব্রাডফোর্ড, বার্মিংহাম, লন্ডনের প্রধান শাখা, কেমডেন শাখা, প্রধান নির্বাহীর কার্যালয় তদন্ত  করবে। ৯ ও ১২ ডিসেম্বর দলটি যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথোরিটি (এফসিএ) ও প্রুডেনশিয়াল রেগুলেটরি অথোরিটির (পিআরএ) সঙ্গেও বৈঠক করবে।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথোরিটি (এফসিএ) বলেছে, সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্য মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্য ব্যাংকটিকে ৩৩ লাখ পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে। এর আগেও ব্যাংকটির যুক্তরাজ্য শাখাকে জরিমানা গুনতে হয়েছে।

শুধু তাই নয়, এফসিএ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্য শাখাকে নতুন গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত গ্রহণের ওপর  আগামী ছয় মাসের (২৪ সপ্তাহ) জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অবশ্য ব্যাংকটি বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠাতে পারবে। জানা গেছে, সম্ভাব্য মুদ্রা পাচার ঠেকাতে পদ্ধতি উন্নত করতে সোনালী ব্যাংককে ২০১০ সালে সতর্ক করেছিল এফসিএ। কিন্তু এরপরের চার বছরেও ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে ব্যর্থ হয় সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্য শাখা। এ জন্য এই জরিমানা করা হয়।

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে, বার্মিংহাম ও ব্রাডফোর্ডে সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখা রয়েছে।  প্রবাসীদের সেবা দিতে ও ঋণপত্রের নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য ২০০১ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যে যাত্রা শুরু করে সোনালী ব্যাংক। এতে সরকারের শেয়ার ৫১ ও সোনালী ব্যাংকের ৪৯ শতাংশ।

এর আগে ২০১৩ সালের ২ জুন সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্যর ওল্ডহ্যাম শাখা থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার (প্রায় ২ কোটি টাকা) হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক ইকবাল আহমেদ ব্যাংকের ভল্ট ও গ্রাহকের হিসাব থেকে অর্থ হাতিয়ে নিলে ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর বন্ধ হয়ে যায় শাখাটি। ওল্ডহ্যাম শাখা বন্ধের পর গত ৩০ জুন লুটন শাখা ও ৩০ সেপ্টেম্বর কেমডেন শাখাও বন্ধ হয়ে যায়। আর এরই ধারাবাহিকতায় ব্যাংকটির ব্র্যাডফোর্ড শাখা বন্ধ করে দেওয়া হবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর।

 

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031