পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত মানসিকভাবে অসুস্থ এক ব্যক্তির ফাঁসির দণ্ড শেষ মুহূর্তে স্থগিত করেছেন। চলতি সপ্তাহে ওই ব্যক্তিকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানোর আদেশ ছিল। তবে ওই ব্যক্তির আইনজীবীরা তাঁদের হাতে থাকা শেষ আইনি কৌশল প্রয়োগ করে ফাঁসির আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আজ সোমবার তা বানচাল করেন।

আইনজীবী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ভাষ্য অনুসারে, মানসিকভাবে অসুস্থ ওই ব্যক্তির নাম ইমদাদ আলী। তিনি হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। ২০১২ সালে কারাবন্দী থাকা অবস্থায় তাঁর সিজোফ্রেনিয়া ধরা পড়ে। এ ধরনের রোগীরা কখনো শাস্তি পেতে পারে না। কারণ তারা তাদের অপরাধ ও শাস্তি কোনোটাই বুঝতে পারে না।

আজ এএফপির খবরে বলা হয়, আগামী ২ নভেম্বর তাঁর ফাঁসি কার্যকরের কথা ছিল। সেটাও উচ্চ আদালতেরই রায় ছিল। ওই সময় সিজোফ্রেনিয়াকে ‘নিরাময়যোগ্য রোগ’ উল্লেখ করে বলা হয়, এটা ওষুধে ভালো হয়। এটা কোনো মানসিক রোগ নয়।
ইমদাদ আলীর পক্ষে দ্য জাস্টিস প্রজেক্ট পাকিস্তান (জেপিপি) নামের সংগঠনটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ফাঁসির রায় স্থগিতাদেশের আইনি বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নতুন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে ইমদাদের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ হয়েছিল, সেই পাঞ্জাব প্রদেশ সরকারও এখন এই রায় উল্টে দেওয়ার উপায় খুঁজছে।
গুলি করে হত্যার দায়ে ইমদাদ আলীকে ২০০১ সালে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। ১৪ বছর ধরে তিনি কারাগারে বন্দী জীবন যাপন করছেন। এর মধ্যে সিজোফ্রেনিয়া ধরা পড়ার পর তিন বছর তাঁকে কারাগারের হাসপাতালে একাকী বন্দী রাখা হয়।
২০১৩ সালে চিকিৎসাসংক্রান্ত এক সরকারি প্রতিবেদনে ইমদাদ আলীকে ‘উন্মাদ’ বলা হয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের প্রতিবেদনে তাঁকে মানসিক রোগী বলে উল্লেখ করা হয়। একজন মনোরোগ চিকিৎসক ইমদাদ আলীকে ‘চিকিৎসা-প্রতিরোধী কেস’ বলেও মন্তব্য করেন।

খবরে বলা হয়, পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিধান থাকার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমালোচনা করার কয়েক দিন পর এই ফাঁসির রায় স্থগিত হওয়ার আদেশ এল। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিধান থেকে সরে না এলে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে পাকিস্তানের পণ্যের ওপর অগ্রাধিকারভুক্ত সুযোগ-সুবিধা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
২০১৪ সালে পাকিস্তান ৪১৮ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মধ্য দিয়ে সৌদি আরবকে টপকে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা দেশে পরিণত হয়। এ ক্ষেত্রে চীন প্রথম ও ইরান দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031