বলিউডের ‘কিং খান’, তিনি আজ ‘বলিউড বাদশা’।শাহরুখ খানের পরিচয় নতুন করে দেয়ার কিছ্ ুনেই।  ছবির জগতে তার উত্থান স্বপ্নের মতোই। কিন্তু শাহরুখ খানের মা-বাবার প্রেম ও তাদের মিলনের মধ্যেও যে এর থেকেও বড় অলৌকিক কাহিনী লুকিয়ে রয়েছে, তা হয়তো অনেকেরই অজানা। শাহরুখ খানের মা-বাবার প্রেমকাহিনী যেকোনো কল্পনা বা ছবিকেও হার মানাবে। ঘটনা আজ থেকে বছর ষাট আগের। প্রতিদিনের মতো সেদিনও নতুন দিল্লির রাস্তায় প্রাতভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তাজ মহম্মদ খান। সঙ্গে ছিলেন তাজের এক চাচাতো ভাই। হাঁটতে হাঁটতে যখন তারা ইন্ডিয়া গেটের কাছে পৌঁছান, তখন তাদের চোখের সামনে ঘটে যায় একটি মারাত্মক গাড়ি দুর্ঘটনা। দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়িটির কাছে তড়িঘড়ি পৌঁছান তাজ ও তার ভাই। দেখতে পান, বিধ্বস্ত গাড়িটির মধ্যে আটকে রয়েছেন তিনটি অল্প বয়সী মেয়ে এবং তাদের বাবা। তরুণী তিনজনের মধ্যে একজনের আঘাত ছিল গুরুতর। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল মেয়েটির শরীর। এরপর তাজ এবং তার ভাই আহতদের নিয়ে যান নিকটবর্তী হাসপাতালে। ডাক্তাররা বলেন, ওই গুরুতর জখম মেয়েটির চিকিৎসার জন্য রক্তের প্রয়োজন। অবিলম্বে রক্ত দিতে না পারলে মেয়েটির জীবন সংশয় পর্যন্ত হতে পারে। তাজ জানতে পারেন, মেয়েটির রক্তের গ্রুপ আর তার নিজের রক্তের গ্রুপ একই। আর দেরি করেননি, নিজেই রক্ত দেন। তাজের রক্ত প্রবেশ করে আহত তরুণীর শরীরে, যার নাম লতিফ ফাতিমা খান। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন ফাতিমা। হাসপাতাল থেকে মুক্তিও মিলে যায়। কিন্তু তাজের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়ে গিয়েছিল। তাজ ফাতিমাদের বাড়িতেও যাতায়াত করতেন নিয়মিত। ফাতিমার পরিবারের লোকজনও খুব পছন্দ করতেন তাজকে। এভাবে মেলামেশা করতে করতেই কখন যেন একে অন্যকে ভালোবেসে ফেলেন তাজ আর ফাতিমা। ফাতিমার বাবা খুব স্নেহ করতেন তাজকে। তিনি স্থির করেছিলেন, তিন মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের সঙ্গে তিনি বিয়ে দেবেন তাজের। একদিন সেই কথা বলেও ফেলেন তাজকে। তাজ বলেন, তিনি ফাতিমাকে বিয়ে করতে চান। কিন্তু কী কা-! তিন বোনের মধ্যে একমাত্র ফাতিমারই বিয়ে ততদিনে স্থির হয়ে গিয়েছে অন্য এক ছেলের সঙ্গে। তবে তাজ আর ফাতিমার ভালোবাসার গভীরতা অনুভব করেছিলেন ফাতিমার বাবা। তিনি শেষ পর্যন্ত তাজের সঙ্গেই বিয়ে দেন ফাতিমার। বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই এক পুত্র সন্তানের জনক-জননী হন তাজ-ফাতিমা। সেই ছেলের নাম শাহরুখ খান, যিনি আজ নিজের অসাধারণ অভিনয়শৈলী দিয়ে সারা বিশ্বের দর্শকদের মনে স্থান করে নিয়েছেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031