শেষ ওভারে জয়ের জন্য রাজশাহীর প্রয়োজন ছিল ৭ রান। বল হাতে তুলে নেন মাহমুউদল্লাহ। তৃতীয় বলে আবুল হাসান রাজু, চতুর্থ বলে মোহাম্মদ সামি ও শেষ বলে নাজমুল ইসলামকে আউট করেন তিনি। মাত্র ৪ রান করতে সক্ষম হয় রাজশাহী, ৩ রানের জয় পায় খুলনা।

জয়ের লক্ষ্য খুব বেশি বড় না হলেও রাজশাহী কিংসের পথচলাকে কঠিন করে দেন খুলনা টাইটানসের পাকিস্তানি পেসার জুনায়েদ খান। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে নুরুল হাসান সোহানকে একটি স্লোয়ার ডেলিভারিতে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে তাণ্ডবটা শুরু করেছিলেন জুনায়েদ। তৃতীয় ওভারটি করেন আরেক পাকিস্তানি স্পিনার মোহাম্মদ আসগর। চতুর্থ ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে তিনি ফিরিয়ে দেন সাব্বির রহমান ও উমর আকমলকে।  শর্ট একটি বল প্রত্যাশার চেয়ে নিচু হয়ে আসলে বোল্ড হন সাব্বির, আর উমর আকমল হন কট বিহাইন্ড। সোহান ৪, সাব্বির ৪ ও উমর আকমল শূন্য- টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের মোট সংগ্রহ যখন ৮, তখন দল চাপে তো পড়তে বাধ্য।

একপ্রান্ত ধরেই রেখেছিলেন মমিনুল হক। সামিত প্যাটেলকে নিয়ে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৩৫ রান যোগ করেন তিনি। সামিত প্যাটেলকে সাজঘরের পথ ধরান আসগর। কাট করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে আরিফুল হকের হাতে ধরা পড়েন ১০ রান করা ইংলিশ এই অলরাউন্ডার।

এরপর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। ২০১২ ও ২০১৬ সালের বিশ্ব  টি-টোয়েন্টি জেতা ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়কের দল যখন জয়ের লক্ষ্য থেকে ৩২ রান দূরে, আর বল রয়েছে ১৭টি, এমন মুহূর্তে শফিউল ইসলামের বলে বোল্ড হন তিনি। ২৩ বলে তিন ছক্কায় সাজানো ছিল তার ৩২ রানের ইনিংসটি।

স্যামির বিদায়ের পর মমিনুল হককে ৬৪ রানে ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন শফিউল ইসলাম। রাজশাহীর শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যান ৮ রানের মধ্যে বিদায় নিলে পরাজয় অবধারিতই হয়ে যায তাদের।

জুনায়েদ খান ২৩ রানে ৪টি, শফিউল ইসলাম ২৯ রানে ২টি ও ২ ওভারে ৬ রানে ৩টি উইকেট নেন মাহমুদউল্লাহ।

এর আগে পেসার আবুল হাসান রাজুর বিধ্বংসী বোলিংয়ে  খুলনা টাইটানসকে ১৩৩ রানে আটকে দিয়েছিল রাজশাহী কিংস। রাজু ২৮ রানে ৫ উইকেট  নিয়ে বিস্তৃত হতে দেননি খুলনার সংগ্রহকে। ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান করে বিপিএলের নবাগত দলটি।

ওপেনার আবদুল মজিদ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরানের ১৫ ও ১৪ রানের ইনিংস দিয়ে পথচলা শুরু করে খুলনা টাইটানস। রানের চাকায় বাড়তি গতি যোগ করেন সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক কেপলার ওয়েসেলসের ছেলে রিকি ওয়েসেলস। ওয়ান ডাউনে নামা রিকি ওয়েসেলস ২২ বলে একটি ছক্কা ও চারটি চারে ৩২ রান করলে শুরুর ঘাটতিটা পুষিয়ে নেয় খুলনা। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ওপর ছিল রানের চাকা সচল রাখার দায়িত্ব, তিনি অলক কাপালিকে নিয়ে দেখেশুনেই খেলে চলেন, মাঝে একটি ধাক্কা খায় খুলনা। শুভাগত হোমকে দিয়ে স্লগ করার চেষ্টা ব্যর্থ হয় তাদের, ৩ রানে বিদায় নেন তিনি।

দলের ১১১ রানে মাহমুদউল্লাহ ২১ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরের পথ ধরেন । আগের বলেই আবুল হাসানের হাতে জীবন পাওয়া খুলনা অধিনায়ক লং অন দিয়ে বল মাঠের বাইরে পাঠাবার চেষ্টায় সফল হননি। ফরহাদ রেজার হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে যবনিকা টানেন তার ইনিংসের।

অলক কাপালি তার অভিজ্ঞতার প্রতিফলনটা দেখাতে পারেননি। পরের বলেই উমর আকমলের তালুবন্দি হন, ১৭ বলে ১১ রান ছিল কাপালির সংগ্রহ।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর কারণে স্কোর বড় হয়নি খুলনার। আরিফুল হকের ৮ বলে ১৪ রানের ইনিংসটি শেষ দিকে খুলনার সংগ্রহে যোগ করে বাড়তি কিছু রান।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031