আজ এক বিবৃতিতে দেশের একটি দৈনিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে অসত্য, মনগড়া, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে আখ্যায়িত করেছেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিবৃতিতে তিনি বলেন, সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মিথ্যাচার পুরো জাতিকে বিস্মিত ও হতবাক করেছে। আওয়ামী লীগ মনে করে খালেদা জিয়ার এই নির্জলা মিথ্যাচার বিএনপি’র দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংস্কৃতিরই অংশ। ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ২৬শে অক্টোবর সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলাপ-আলোচনার কর্মসূচি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে একাধিকবার টেলিফোন করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার উদারতা ও শিষ্ঠতার বিপরীতে যে অশালীন, আক্রমণাত্মক ভাষা ও আচরণ করেছিলেন, তা টেলিফোন সংলাপের বিস্তৃত বিবরণীতে সচেতন মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। উক্ত ঘটনার ৩ বছর পর বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার টেলিফোন করার ঘটনাকে ‘‘সাজানো নাটক’’ বলে উল্লেখ করে ব্যক্তি খালেদা জিয়া ও বিএনপি তাদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক হীনতা ও দেউলিয়াপনাকে পুণরায় নগ্নভাবে জাতির কাছে প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়,বাংলাদেশের মানুষ জানে আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা একাধিকার ফোন করার পরও দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে সাড়া পেতে। বেগম খালেদা জিয়া ক্রমাগত বিষদ্্গার ও প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা এবং বানোয়াট অভিযোগের পরও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত আন্তরিকভাবেই বেগম খালেদা জিয়াকে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তার দোসর যুদ্ধাপরাধী ও সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের খুশি রাখার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার সংলাপের আন্তরিক আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। পরবর্তীতে সাধারণ নির্বাচন প্রতিহত করার নামে সারা বাংলাদেশে পেট্রোল বোমা ও নারকীয় আগুন সন্ত্রাস ও প্রতিহিংসার এক বীভৎস ও বিকৃত রাজনীতি শুরু করে। যার লক্ষ্য ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ছিল গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতি অবিচল ও ঐক্যবদ্ধ। এ প্রসঙ্গে জনাব ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র বিয়োগের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে সমবেদনা জ্ঞাপনের জন্য বিএনপি নেত্রীর গুলশান কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। সেদিনও তিনি মানবিক শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ করে অত্যন্ত অসৌজন্যমূলকভাবে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ের মূল দরজা বন্ধ করে দিয়ে প্রকারান্তরে যে কোন ধরনের আলাপ-আলোচনা ও সংলাপের দরজাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি জন্মলগ্ন থেকেই বাংলাদেশে গুম, হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে চলেছে। বিএনপি রাজনীতিতে কোন ধরনের সভ্যতা, ভব্যতার লেশমাত্র নেই। খালেদা জিয়া ও বিএনপির রাজনীতি শিষ্টাচার ও নীতি বিবর্জিত এক অপরাজনীতি। আমরা দেখেছি বিএনপির শিষ্টাচার বর্জিত প্রতিহিংসার এই রাজনীতির শিকার শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিংবা বাংলাদেশের জনগণ নয়। তারা বিদেশের বিশেষ অতিথিদেরও অসম্মান, অপমান করতে কুণ্ঠাবোধ করেন না। বিএনপি নেত্রী তার সহযোগী ’৭১-এর ঘাতক স্বাধীনতা বিরোধী জামাতিদের হরতাল সমর্থন দেখিয়ে সফররত ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে নির্ধারিত সাক্ষাৎকার কর্মসূচি বাতিল করে কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত যে ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন তার জন্য সেদিন সমগ্র জাতি লজ্জা পেয়েছে। ঘটনার ৩ বছর পর এই নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন নিজের ‘‘প্রাণনাশের চক্রান্ত”-এর আজগুবি তথ্য উপস্থাপন করে জাতির সাথে নিষ্ঠুর তামাশা করছেন। ওবায়দুল কাদের বিবৃতি বলেন, জাতীয় সংসদ নিয়ে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে মন্তব্য করেছেন তা জাতির সাথে ধৃষ্টতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সংসদ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত কার্যকর ও শক্তিশালী। যা ইতোমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে স্বীকৃতি পেয়েছে। বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় সংসদ নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার কটাক্ষ বিএনপির ভুল রাজনীতির হতাশার বহিঃর্প্রকাশ। বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো বিএনপির হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন ও গুমের রাজনীতির কথা ভুলে যায়নি। তাদের দুঃশাসনের শিকার হয়ে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতা-কর্মীকে নির্মমভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। বিএনপি-জামাতচক্র ২০১৫ সালে তথাকথিত হরতাল-অবরোধের নামে সারাদেশে সহিংস ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেড়শতাধিক মানুষকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এমপি আশা প্রকাশ করেন দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন। নিত্যকার মনগড়া মিথ্যাচার ও অর্বাচীন বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা থেকে বিরত থাকবেন এবং গণতন্ত্র ও রাজনীতির ইতিবাচক সুস্থ ধারায় ফিরে আসবেন।
| M | T | W | T | F | S | S |
|---|---|---|---|---|---|---|
| 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 |
| 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 |
| 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 |
| 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 |
| 29 | 30 | 31 | ||||
