ইয়াবাসহ আটকের পর মামলা না করে আসামি ছেড়ে দিয়েছিল বাকলিয়া থানার এএসআই রিদওয়ান।  সেই ইয়াবা বিক্রি করতে গিয়ে শনিবার রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা টিমের হাতে আটক হয়েছে রিদওয়ান।

শনিবার রাতে এএসআই রিদওয়ানের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ‍অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের এস আই মোহাম্মদুল হক বাদি হয়ে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

একইদিন সন্ধ্যায় নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোডে একটি প্রাইভেট কারে তল্লাশি চালিয়ে ১৭০০ পিস ইয়াবাসহ তিনজনকে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।  এএসআই রিদওয়ান ছাড়া জিল্লুর রহমান ও জেরিন নামে এক তরুণী।

আটকের পর শনিবার রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে গিয়ে এএসআই রিদওয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিএমপির উপ কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাইন বিল্লাহ, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো.আব্দুর রউফ এবং বাকলিয়া থানার ওসি আবুল মনছুর।

সূত্রমতে, এএসআই রিদওয়ান পুলিশ কর্মকর্তাদের জানান, গত ১১ নভেম্বর রিদওয়ান নগরীর শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে ১৭০০ পিস ইয়াবাসহ একজনকে আটক করে।  কিন্তু ইয়াবাগুলো থানায় জমা না দিয়ে তিনি নিজের কাছে রাখে।  আটক হওয়া মাদক বিক্রেতা কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ইয়াবাগুলো নিয়ে নগরীতে প্রবেশ করছিল।  আটকের পর তাকে ছেড়ে দেয় এএসআই রিদওয়ান।

১৮ নভেম্বর থেকে রিদওয়ানের ডিউটি বাকলিয়া থানা থেকে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে স্থানান্তর হয়।  বিপিএল ফুটবল আসরের জেনারেটর রুমে দায়িত্বরত ছিল রিদওয়ান।  ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত সেখানে তার ডিউটি ছিল।  রিদওয়ান এর মধ্যেই ইয়াবাগুলো বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ইয়াবাগুলো বিক্রি করতে গিয়ে রিদওয়ান আরেক অপরাধের আশ্রয় নেয়।  সে বিক্রেতা জিল্লুরের সঙ্গে যোগাযোগ করে এক লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে নিউমার্কেট মোড়ে আসতে বলে।  নিজে প্রাইভেট কারে একজন কলগার্ল নিয়ে সেখানে যায়।  তার ইচ্ছা ছিল, জিল্লুরকে প্রাইভেট কারে তুলে কলগার্ল দিয়ে জিম্মি করে টাকাগুলো হাতিয়ে নেয়া।

কিন্তু এর আগেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা টিমের হাতে জিল্লুর, জেরিনসহ রিদওয়ান  ধরা পড়ে যায়।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপ কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাইন বিল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, সোর্সের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এএসআই রিদওয়ান ইয়াবাসহ একজনকে আটক করে ছেড়ে দিয়েছিল।  তার বিরুদ্ধে যেহেতু মামলা হয়েছে, তদন্তে এসব বিষয় আরও পরিস্কার হবে।  সব অপরাধের জন্য তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে আটকের পর এএসআই রিদওয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোস্তাইন বিল্লাহ।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহকারী পরিচালক জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা এএসআই রিদওয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।  তারাই সব তথ্য নিয়েছেন।  আমরা কোতয়ালি থানায় মামলা করেছি।  পরবর্তী পদক্ষেপ তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ নেবে।

বাকলিয়া থানার ওসি আবুল মনছুর বাংলানিউজকে বলেন, রিদওয়ান গত ১৮ নভেম্বর থেকে আমার থানায় নেই।  তার ডিউটি স্টেডিয়ামে।  ইয়াবা বিক্রির সঙ্গে থানার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031