আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নিলেন জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া। আজ মঙ্গলবার সেনা সদর দপ্তারের কাছে আর্মি হকি স্টেডিয়ামে তার হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দেন বিদায়ী সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরীফ। এ সময় ভারতকে হুঁশিয়ার করে বক্তব্য রাখেন রাহিল শরীফ। তিনি বলেন, কাশ্মির সমস্যার সমাধান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। ভারত কাশ্মিরে ‘নৃশংসতা চালিয়েছে’। ভারতের এসব ‘আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি’। এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানের অনলাইন ডন। এতে বলা হয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে ব্যাটন অব কমান্ড বলে পরিচিত একটি রুল জেনারেল বাজওয়ার হাতে হাতবদল করেন রাহিল শরীফ। ওই রুলটি প্রথা অনুযায়ী মালাকার বেত দিয়ে তৈরি। এটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমার্ন্ডিং লাঠি বলে পরিচিত। এ সময়ে বিদায়ী ভাষণ দেন জেনারেল রাহিল শরীফ। তিনি জাতীয় অগ্রযাত্রায় সব প্রতিষ্ঠানকে একত্রে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। একই সঙ্গে ভারতের আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, আভ্যন্তরীন ও বাইরের হুমকির বিরুদ্ধে সব প্রতিষ্ঠানকে এক সঙ্গে কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আমাদেরকে অনুসরণ করা উচিত ন্যাশনাল একশন প্লান। কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব আমাদেরকে যেভাবে সহযোগিতা করেছেন সে জন্য ধন্যবাদ। আমাদেরকে সারাদেশ সহযোগিতা করেছে। এ জন্য তিনি সেনাবাহিনী ও দেশবাসীর প্রতি ধন্যবাদ জানান। তিনি হুঁশিয়ারি করে বলেছেন, দেশের ভিতর থেকে হোক বা বাইরে থেকে হোক যেকোনো হুমকির বিষয়ে সেনাবাহিনী সতর্ক থাকবে। এ সময় তিনি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ভারতীয় ‘নৃশংসতা’র বিষয় উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কয়েক মাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ভারতের ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাস ও আগ্রাসী অবস্থান এ অঞ্চলকে বিপন্ন করে তুলেছে। ভারতের জানা উচিত যে, আমাদের ধৈর্য্যকে যদি তারা ভুল করে দুর্বলতা মনে করে তাহলে তা হবে ভয়ংকর। কাশ্মির ইস্যুর সমাধান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই শান্তি ও অগ্রগতি অসম্ভব। এটাই বাস্তবতা। এ জন্য এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মহলের বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন। আঞ্চলিক শান্তির জন্য সব ইস্যুই রাজনৈতিকভাবে সমাধান হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, আঞ্চলিক শান্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর একটি বড় ফ্যাক্টর। এরই মধ্যে গোদার বন্দর থেকে প্রথম কার্গোটি যাত্রা শুরু করেছে। ফলে এ জার্নি আর থামানো যাবে না। তাই সিপিইসি বন্ধ করতে যারা চেষ্টা করেছেন তাদের শত্রুতা বন্ধ করা উচিত এবং এর অংশ হওয়া উচিত। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ, তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব, জাতীয় পরিষদের স্পিকার আয়াজ সাদিক, পিপিপি নেতা আবদুল কাদির প্যাটেল, সাবেক সেনাপ্রধান আশফাক পারভেজ কিয়ানি প্রমুখ। এর আগে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করলে বিদায়ী সেনা প্রধানকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031