অভিবাসীদের সুরক্ষায় নয় দফা প্রস্তাবে এসব কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর। সব ধরনের কর্মসূচি ও পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে অভিবাসীদের স্বার্থকে স্থান দিতে হবে। বৈধ ও উন্মুক্ত অভিবাসনের যথাযথ পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অভিবাসনের ক্ষেত্রেও নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করতে হবে। একইসঙ্গে ঠেকাতে হবে মানবপাচার
শনিবার নবম গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (জিএফএমডি) সম্মেলনের প্রথম দিনে ‘কমন স্পেস: কমপ্যাক্ট ফর গভর্ন্যান্স অব মাইগ্রেশন’ শীর্ষক সেশনে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এই প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন। এতে বলা হয়েছে, অভিবাসী ও তাদের পরিবারের স্বার্থ রক্ষায় সব ধরনের আলোচনা, কর্মসূচি ও প্রক্রিয়ার কেন্দ্রে অভিবাসীদের স্থান দিতে হবে। অভিবাসীদের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অভিবাসনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তৃতীয় দফায় আকবর প্রস্তাব করেছেন নিরাপদ, সুশৃঙ্খল, নিয়মিত, উন্মুক্ত ও বৈধ অভিবাসনের পরিবেশ তৈরির। এ ছাড়া দক্ষতা ও মানবিক চলাচলের অংশীদারিত্বে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নারী-পুরুষের মধ্যে লৈঙ্গিক ব্যবধান না রেখে বৈষম্যহীন নীতি গ্রহণ করতে হবে।
ওই নয়টি প্রস্তাবের মধ্যে আরও বলা হয়েছে, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ বিশেষ ঝুঁকির মুখে থাকা ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ আচরণের সুযোগ অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে, নির্যাতন ও হয়রানির ঝুঁকি চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধ করার মাধ্যমে অভিবাসীদের মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে, মানবপাচার রোধ করতে হবে, পাচারের শিকার ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরি করতে হবে এবং প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ও সংঘাতের ফলে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় আইন তৈরি করতে হবে।
এর আগে প্রস্তাবনা উত্থাপনের শুরুতেই অভিবাসীদের উন্নয়ন ও অধিকার রক্ষায় এই সম্মেলন আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান এম জে আকবর। তিনি বলেন, আমাদের আগের প্রজন্ম শরণার্থীদের কষ্ট দেখেছে। আমরাও তা সহ্য করছি। আগামী প্রজন্মকে যেন এটা দেখতে না হয় তা নিশ্চিত করার তাড়না নিয়েই আজ আমরা এখানে মিলিত হয়েছি।
ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারত ‘বাসুদেব কুটুম্বকম’ শ্লোকে বিশ্বাস করে। এর অর্থ হলো গোটা বিশ্বই একটি পরিবার। আমরা মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। তবে অভিবাসী আর উদ্বাস্তু এক নয়। দু’টি বিষয়কে এক করে দেখলে উভয়ের প্রতিই অবিচার করা হবে। দু’টি সমস্যা ভিন্ন ধরনের। এদের সমাধানও এক হতে পারে না।
আকবর আরও বলেন, অভিবাসনের অর্থনৈতিক প্রেক্ষিত মোকাবিলা করতে আমাদের আরও সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে। টেকসই উন্নয়নে আমাদের এজেন্ডা ২০৩০ নিয়ে একযোগে কাজ করতে হবে। ওই এজেন্ডায় আমরা শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে, নিরাপদে, নিয়মিতভাবে ও দায়িত্বশীল অভিবাসনের সুযোগ করে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ এবং নিরাপদ ও সুরক্ষিত কর্মপরিবেশও নিশ্চিত করতে হবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031