ওজন কমানোর প্রচেষ্টাকে বাধা দেয় ডায়েট সোডা ইঁদুরের ওপর করা এক নতুন গবেষণায় জানা যায় যে ।
গবেষণায় গবেষকেরা দেখেছেন যে, কৃত্রিম মিষ্টিকারক অ্যাস্পারটেম যা কিছু ডায়েট ড্রিংক এ পাওয়া যায় তা “মেটাবলিক সিনড্রোম” এর উন্নয়নের সাথে জড়িত যা ক্লাস্টার উপসর্গ যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল এবং কোমরের মাপ বৃদ্ধি ইত্যাদির সাথে সম্পর্কিত। মেটাবলিক সিনড্রোম আছে যাদের তাদের হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
গবেষকেরা খুঁজে পেয়েছেন যে, অ্যাস্পারটেম এবং মেটাবলিক সিনড্রোম এর মধ্যে সম্পর্ক বিদ্যমান। অ্যাস্পারটেম সম্ভবত অন্ত্রের প্রধান এনজাইমের নিঃসরণকে বন্ধ করে দেয় যা পরিপাকের সময় চর্বিকে ভাংতে সাহায্য করে।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের সার্জারির অধ্যাপক এবং গবেষণার সিনিয়র লেখক ডা. রিচার্ড হডিন লাইভ সাইন্সকে বলেন কেন ডায়েট ড্রিংক ওজন কমাতে অকার্যকর হতে পারে তার ব্যাখ্যা হতে পারে এটি।
গবেষণায় তিনটি পৃথক পরীক্ষা করা হয়। প্রথম পরীক্ষাটিতে গবেষকেরা নিয়মিত সোডা এবং ডায়েট সোডার দ্রবনের সাথে অন্ত্রের এনজাইমকে যুক্ত করেন। তারা দেখতে পান যে, এনজাইমের সক্রিয়তা ডায়েট সোডার দ্রবণে তাৎপর্যপূর্ণভাবেই কম থাকে সাধারণ সোডার দ্রবনের তুলনায়।
সাধারণত এই এনজাইম – ইন্টেস্টাইনাল অ্যালকালাইন ফসফেটেজ (আইএপি) অন্ত্রের ফ্যাটি এসিড এবং কোলেস্টেরলকে ভাংতে সাহায্য করে। পূর্ববর্তী গবেষণায় গবেষকেরা দেখিয়েছেন যে, আইএপি এর মাত্রা স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং মেটাবলিক সিনড্রোমের ঝুঁকির সাথে সম্পর্কিত।
দ্বিতীয় গবেষণায় পুরুষ ইঁদুরের ক্ষুদ্রান্ত্রে অ্যাস্পারটেম এর প্রভাব লক্ষ্য করেন। তারা ইনজেকশনের মাধ্যমে অ্যাস্পারটেমের দ্রবণ বা লবণ পানির দ্রবণ ইঁদুরের ক্ষুদ্রান্তে প্রবেশ করান। তারপর অন্ত্রের এনজাইমের সক্রিয়তার পরিমাপ করেন। ৩ ঘন্টা পরে তারা দেখতে পান যে, যে ইঁদুরকে লবণ পানির দ্রবণ দেয়া হয়েছিলো তার তুলনায় যে ইঁদুরকে অ্যাস্পারটেমের ইনজেকশন দেয়া হয়েছিলো তার অন্ত্রের এনজাইমের কার্যকারিতা ৫০% কমে যায়।
চূড়ান্ত পরীক্ষায় গবেষকগণ পুরুষ ইঁদুরের ৪ টি দলকে ১৮ সপ্তাহ যাবৎ পর্যবেক্ষণ করেন। ইঁদুরদের যত খুশি খাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। দুটি দলকে স্বাভাবিক খাবার এবং অপর দুটি দলকে উচ্চ মাত্রার চর্বি যুক্ত খাবার খেতে দেয়া হয়। প্রতিটি বিভাগের একটি দলকে অ্যাস্পারটেম যুক্ত পানি পান করতে দেয়া হয়। অন্যদের সাধারণ পানি পান করতে দেয়া হয়।
এই পরীক্ষার শেষে গবেষকেরা দেখতে পান যে, যে ইঁদুরদেরকে উচ্চ চর্বি যুক্ত খাবার এবং অ্যাস্পারটেম যুক্ত পানি পান করানো হয় তাদের ওজন অনেক বেশী বৃদ্ধি পায় যাদের উচ্চ চর্বি যুক্ত এবং সাধারণ পানি পান করানো হয় তাদের তুলনায়।
যদিও সাধারণ খাবারের সাথে অ্যাস্পারটেম যুক্ত পানি পান করানোর ফলে তেমন কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। অর্থাৎ সাধারণ পানি ও অ্যাস্পারটেম যুক্ত পানি পান করার ফলে তাদের ওজন বৃদ্ধি পায়নি।
হডিন লাইভ সাইন্স কে বলেন, মানুষের ক্ষেত্রে অ্যাস্পারটেমের প্রভাব আরো বেশী জটিল হতে পারে কারণ “মানুষের আচরণের সাথে সম্পর্কিত আরো অনেক বিষয় থাকতে পারে”। তিনি আরো বলেন, “সবই এক, ডায়েট ড্রিংক্স সম্ভবত চিনিযুক্ত সোডার চেয়ে খুব ভালো বিকল্প নয়। পানি সম্ভবত সবচেয়ে ভালো”।
