সড়ক দুর্ঘটনায় জানুয়ারি মাসে সারা দেশে ৪১৬ জন নিহত ও এক হাজার ১২ জন আহত হয়েছেন। ১লা জানুয়ারি থেকে ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত সংঘটিত ৩৫০টি দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে ৫৪ নারী ও ৫৫ শিশু রয়েছে। মহাসড়ক, জাতীয় সড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে এসব প্রাণঘাতি দুর্ঘটনা ঘটে। বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির মাসিক নিয়মিত পরিসংখ্যান ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। ২০টি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং ৮টি অনলাইন নিউজপোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জাতীয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের হার ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারি মাসে বেড়েছে। জাতীয় কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিদায়ী ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সারা দেশে মোট ২৮১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাণঘাতি এসব দুর্ঘটনায় ৩৩২ জন নিহত ও ৬৫৪ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে ৫০ নারী ও ৩৮ শিশু রয়েছে। অন্যদিকে জানুয়ারিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৫০টি; যাতে ৫৪ নারী ও ৫৫ শিশুসহ ৪১৬ জন নিহত ও এক হাজার ১২ জন আহত হন। এতে দেখা যায়, ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে ৬৯টি। আর নিহত ও আহতের সংখ্যা বেড়েছে যথাক্রমে ৮৪ ও ৩৫৮। গত দুই মাসের এই পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিদায়ী বছরের শেষ মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম মাসে সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও আহতের হার যথাক্রমে ২৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ, ২৫ দশমিক ৩১ শতাংশ ও ৫৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে জানান, সড়ক দুর্ঘটনা ফের বৃদ্ধির পেছনে চারটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছেন তারা। এগুলো হলো- সড়ক ও মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ স্থানীয়ভাবে তৈরি যন্ত্রচালিত ক্ষুদ্র যানবাহনের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া, দূরপাল্লার অধিকাংশ যানবাহনে কুয়াশাভেদী বাতি না থাকা সত্ত্বেও শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশার মধ্যে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো, গ্রামীণ জনপদসহ আঞ্চলিক সড়কগুলোতে মোটরসাইকেলে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী বহনের কারণে অদক্ষ চালকের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি এবং পদচারি ও অযান্ত্রিকসহ ক্ষুদ্র যানবাহন চালকদের সচেতনতার অভাব। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনার জন্য সাতটি সাধারণ কারণ শণাক্ত করেছে জাতীয় কমিটি। সেগুলো হলো- বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ, নিয়ম ভঙ্গ করে ওভারলোডিং ও ওভারটেকিং করার প্রবণতা, চালকদের দীর্ঘক্ষণ বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের ঘাটতি এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও চলাচলের অনুপযোগী সড়ক।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031