মেডিকেল ছাত্রী সাদিয়া জাহান খান (২৩)। এ বছর ৫ম বর্ষে পড়ছিলেন। আগামী বছরই তার এমবিবিএস শেষ করার কথা ছিল। নাম লেখানোর কথা ছিল মহান ডাক্তারি পেশায়। কিন্তু এক নিমিষেই তা শেষ হয়ে গেলো। পিতা-মাতা ও পরিবার-পরিজনের লালিত স্বপ্ন কেড়ে নিলো ঘাতক বাস। সেই সঙ্গে কেড়ে নিলো সাদিয়ার মূল্যবান জীবনটাও। গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বংশাল এলাকায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন সাদিয়া ও তার মা। এতে প্রাণ হারান তিনি। গুরুতর আহত হন মা শাহিনা সুলতানা। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন। সাদিয়াকে তার মা-বাবা সব সময় আগলে রাখতেন। বাড়ি থেকে ঢাকায় ফেরার পথে কখনো একা ছাড়তেন না। একেবারে মেয়ের কলেজ হোস্টেল পর্যন্ত পৌঁছে দিতেন। গতকালও মেয়েকে হোস্টেলে পৌঁছে দিতে রাজশাহী থেকে সঙ্গী হয়েছিলেন মা শাহিনা সুলতানা। আর কিছুক্ষণের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানোরও কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘাতক বাসের ধাক্কায় মারা গেলেন সাদিয়া। গতকাল বেলা দেড়টার দিকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিয়ে গেছে স্বজনরা।
নিহতের ফুফা ডা. আতোয়ার রহমান জানান, সাদিয়াদের বাড়ি রাজশাহী সদরের কোর্ট স্টেশন রোডের হরগ্রাম এলাকায়। বাবা হাসানুজ্জামান খান পূবালী ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম। সাদিয়ারা দুই ভাইবোন। সে ছোট। বড় ভাইটা সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছে। আর সাদিয়া পড়তো ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ বছর ৫ম বর্ষে পড়ছিলো সে। আগামী বছরই তার ফাইনাল পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। বেশ কয়েক দিন ছুটি কাটানোর পর কাল মা শাহিনা সুলতানা তাকে কলেজ হোস্টেলে পৌঁছে দেয়ার জন্য রাজশাহী থেকে ট্রেনে ওঠেন। সকালে তারা রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনে পৌঁছান। এরপর কলেজ হোস্টেলে যাওয়ার জন্য মা-মেয়ে সিএনজি ভাড়া করেন। পথিমধ্যে সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে বংশালের নয়াবাজার এলাকায় হোটেল আল রাজ্জাকের সামনে একটি বাস তাদের সিএনজিকে ধাক্কা দেয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা সাদিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। অপরদিকে মা শাহিনা সুলতানা আহত হন। ডা. আতোয়ার জানান, সাদিয়ার মা মাথায় আঘাত পেয়েছেন। বেশ কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, সাদিয়ার স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল থেকে নিয়ে যায়। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, সাদিয়ার মা শাহিনার আঘাত গুরুতর নয়। দুর্ঘটনায় সিএনজিটি উল্টে গিয়েছিল বলেও তিনি জানান। বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম জানান, দুর্ঘটনার পর ঘাতক বাসটি পালিয়ে গেছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
| M | T | W | T | F | S | S |
|---|---|---|---|---|---|---|
| 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 |
| 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 |
| 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 |
| 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 |
| 29 | 30 | 31 | ||||
