আজ রবিবার তুরস্কে অনুষ্ঠিত হবে গণভোট তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের প্রস্তাবিত সংবিধান পরিবর্তনের লক্ষ্যে । স্থানীয় সময় সকাল সাতটা থেকে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। এক লাখ ৬৭ হাজার ভোট কেন্দ্র ভোট দেবেন প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ভোটার। রবিবার বিকাল নাগাদ ফলাফল জানা যাবে।
ভোটের ফলাফল যদি গণভোটের পক্ষে যায়, তাহলে তুরস্কের শাসনপদ্ধতিতে এক মৌলিক পরিবর্তন ঘটবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর ফলে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ক্ষমতা ব্যাপক বাড়বে। বিরোধিরা এই গণভোট আটকাতে প্রবল চেষ্টা করে যাচ্ছে।
পার্লামন্টে এ নিয়ে বিতর্কের সময় এমপিদের মধ্যে ধস্তাধস্তিও হয়েছে। একজন সরকারপন্থী এমপি অভিযোগ করেন, এক বিরোধী এমপি তার পায়ে কামড় দিয়েছেন। ফুলের টব ছুঁড়ে মারা হয়েছে। মাইক্রোফোন চুরি করে তা ‘অস্ত্র হিসেবে’ ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে।
গণভোটের বিষয়বস্তুতে যা রয়েছে-
সাংবিধানিক পরিবর্তনে তুরস্কের পার্লামেন্টারি পদ্ধতি বদলে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার প্রবর্তন। প্রেসিডেন্ট হবেন নির্বাহী প্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান এবং রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও তার সম্পর্ক থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা বিলুপ্ত করে দুই বা তিন জন ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ তৈরি করা হবে।
প্রেসিডেন্ট হাতে পাবেন নতুন ক্ষমতা। তিনি মন্ত্রীদের নিয়োগ দেবেন, বাজেট তৈরি করবেন, সিনিয়র বিচারপতিদের অধিকাংশ নিয়োগও দেবেন তিনিই এবং ডিক্রি জারি করে কিছু বিষয়ে আইনও করতে পারবেন।
প্রেসিডেন্ট একাই জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন, পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারবেন। পার্লামেন্ট এখন থেকে আর মন্ত্রীদের ব্যাপারে তদন্ত করতে পারবে না। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠদের ভোটে এমপিরা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। প্রেসিডেন্টের বিচারের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ এমপির সমর্থন লাগবে। এমপিদের সংখ্যা ৫৫০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০ করা হবে।
প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন একই দিনে হবে। প্রেসিডেন্ট দুই মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। খসড়া প্রস্তাবে ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয়েছে।
এরদোয়ান মনে করেন, এসব পরিবর্তন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া দ্রুততর করবে। যদি গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয় পায় তাহলে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এরদোয়ানকে ক্ষমতায় দেখা যাবে।
যদিও তার সমালোচকরা বলছেন, এতে এরদোয়ানের স্বৈরশাসন কায়েম হবে, গণতন্ত্রের মৃত্যুঘন্টা বাজবে। সমালোচকরা মনে করেন এর পলে তুরস্কের প্রায় আট কোটি জনগণকে ব্রেক ছাড়া একটি বাসে তুলে দেয়ার পরিকল্পনা করছেন এরদোয়ান। এই বাস যাত্রার শেষ কোথায় কেউ জানে না।
