আজ বৃহস্পতিবার সুমাইয়াকে উদ্ধারে জানান রাজধানীর লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহিম খাঁ এসব তথ্য জানান।

কামরাঙ্গীরচর থেকে অপহরণের পর শিশু সুমাইয়া আক্তারকে ভারতে পাচার করতে চেয়েছিলেন সাবিনা আক্তার বৃষ্টি। এ উদ্দেশ্যে বৃষ্টি গত ২৫ দিন পাঁচ বছরের সুমাইয়াকে নিজের কদমতলীর বাসায় আদরে  রেখেছিলেন।

গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর কদমতলী থানার রহমতবাগের দক্ষিণ ধনিয়ার কামালের বাড়ি থেকে সুমাইয়া আক্তারকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় সাবিনা আক্তার বৃষ্টি ও তার সহযোগী সিরাজ মিয়া ওরফে বাবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বৃষ্টির স্বীকারোক্তির সূত্রে পুলিশ বলছে, অপহরণকারী বৃষ্টিকে তার মা খুব ছোট বয়সে পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়েছিল। সে এখন প্রতি মাসে ভারতে যায়। সুমাইয়াকে তার সঙ্গে ভারতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সেখানে তাকে বিক্রি করে দিত বৃষ্টি। এই উদ্দেশ্যেই সে সুমাইয়াকে অপহরণ করে কদমতলীর দক্ষিণ ধনিয়ার রহমতবাগের বাসায় রেখেছিল।

গত ৩ এপ্রিল বিকাল পাঁচটার দিকে রাজধানীর কামরাঙ্গীর চর এলাকার বড়গ্রাম বাসার সামনের রাস্তা থেকে নিখোঁজ হয় শিশু সুমাইয়া। নিখোঁজের পর সুমাইয়ার বাবা জাকির হোসেন কামরাঙ্গীরচর থানায় সাধারণ ডায়েরি এবং পরে অপহরণ মামলা করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বৃষ্টি সুমাইয়াকে অপহরণের কথা স্বীকার করে বলে জানান লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার। তিনি বলেন,  সাবিনা আক্তার বৃষ্টি মাস ছয়েক আগে শিশু সুমাইয়াদের পাশের বাড়িতে ভাড়া থাকত। এ ছাড়া মাঝে মাঝে সুমাইয়াদের বাড়িতে যেত বৃষ্টি। অপহরণের দিন বিকাল পাঁচটার দিকে গিয়েছিল। তখন সুমাইয়ার মা ঘরের ভেতরে ছিলেন। এই সুযোগে সুমাইয়াকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যায় বৃষ্টি।

উপকমিশনার বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর আমরা বৃষ্টিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি ভারতে পাচার করার জন্য অপহরণ করা হয়েছিল শিশু সুমাইয়াকে।’

জিজ্ঞাসাবাদে বৃষ্টি জানান, খুব ছোট বয়সে তাকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়েছিলেন মা। এ ছাড়া তার স্বামী একজন মাদকসেবী। তিনি মাদকের মামলায় এখন কারাগারে।

বৃষ্টি কোনো চক্রের সঙ্গে জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান উপকমিশনার।
শিশু সুমাইয়া যেদিন অপহৃত হয় সেদিন তার বাবা জাকির হোসেন পেশাগত কাজে বাইরে ছিলেন। তিনি বলেন, বাড়ি ফিরে ওই দিন রাত থেকে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় মাইকিং করেন। পরে বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকা অফিসে দৌড়ঝাঁপ করেন। কিন্তু মেয়ের সন্ধান পাননি। দু-তিন দিন আগে প্রথম আলো পত্রিকায় সুমাইয়াকে নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হলে পুলিশ প্রশাসন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের নজরে আসে। সুমাইয়াকে উদ্ধারে তৎপর হয় পুলিশ।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031