দেলদুয়ারে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দেলদুয়ার থানা পুলিশের এসআই ইয়াছিন আরাফাত ও  প্রতিপক্ষ চৈতন্য রায়ের ধাক্কায় সানা মোহন ঘোষ (৭২) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে টাঙ্গাইলে । রবিবার বিকালে উপজেলার পাথরাইলে এ ঘটনা ঘটে।

সানা মোহনের মৃত্যুর পর তার ছোট ছেলে সোমবার দুপুরে দেশে ফেরার পর স্বজনরা মামলা করবেন বলে জানা গেছে। হত্যার অভিযোগ ওঠার পর চৈতন্য রায় তার পরিবার নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন।

রবিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের এডিশনাল এসপি আসলাম খান, টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হোসেন ভূইয়া, দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় নিহতের স্বজনরা এডিশনাল এসপির কাছে অভিযোগ করেন, দেলদুয়ার থানার এসআই ইয়াছিন আরাফাতে ধাক্কাতেই সানা মোহনের মৃত্যু হয়। তারা অভিযোগে বলেন, সীমানা প্রাচীর ভাঙতে গেলে একপর্যায়ে সানামোহন বাধা দিলে চৈতন্য ও সানামোহনের সাথে ধস্তাদস্তি করে। একপর্যায়ে এসআই ইয়াছিন আরাফাত ধাক্কা দিলে সানা মোহন ঘরের দেয়ালে লেগে পড়ে যায়। পরে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

টাঙ্গাইলের এডিশনাল এসপি আসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখন বিষয়টি নিয়ে ধুম্রজালে পড়েছি। আমরা চৈতন্য ও এসআই ইয়াছিন আরাফাত উভয়ের বিরুদ্ধেই অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে যেই অপরাধী হোক তাকেই আইনের আওতায় এনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখন আলোচনা উঠেছে পুলিশের এসআই নাকি চৈতন্য ফেঁসে যাচ্ছে?

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সানা মোহন ও চৈতন্য রায়ের সাথে কিছুদিন ধরেই রাস্তার জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। নরেন্দ্র ঘোষের ছয় শতাংশ জমি কিনেন চৈতন্য রায়। এক হাত রাস্তা থাকবে বলে শর্ত দেয়া হয় । নরেন্দ্র ঘোষ এক হাত রাস্তাও দিয়েছেন। চৈতন্য বর্তমানে নরেন্দ্র ঘোষের বড় ভাই সানা মোহন ঘোষের কাছে গাড়ি প্রবেশের মতো অতিরিক্ত জায়গা দাবি করায় বিরোধের সূত্রপাত হয়। এদিকে এক হাতের বেশি জায়গা রেখে সানামোহন ঘোষ বাড়িতে পাকা ঘর নির্মাণ করছেন।

এর ধারাবাহিকতায় রবিবার দুপুরে দেলদুয়ার থানা পুলিশ ও উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম ফেরদৌসসহ বেশ কয়েকজন লোক জায়গাটি পরিদর্শনে ও বিরোধ মীমাংসা করতে ঘটনাস্থলে আসেন। আলোচনার এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এসময় চৈতন্য উত্তেজিত হয়ে সানা মোহনকে শারীরিকভাবে আঘাত করেন। এরপর তিনি পড়ে যান। আহত অবস্থায় তাকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্বজনসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশের ধাক্কায় সানা মোহনের মৃত্যুর অভিযোগ তুললেও দেলদুয়ার থানা পুলিশ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তারা বলছেন, পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর তার মৃত্যু হয়েছে।

এ ব্যাপারে পাথরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফুজ্জামান লিটন ঢাকাটাইমসকে বলেন, এর আগে আমি জায়গাটা পরিদর্শন করে এক হাতের বেশি রাস্তা রাখার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কথা অনুসারে রাস্তা রেখেছিল। আজ হঠাৎ উপজেলা থেকে লোকজন আসার পরই এ ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে দেলদুয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম ফেরদৌস আহমেদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমি শুনেছি তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। তবে প্রতিবেশীদের চলাচলের জন্য আরেকটু রাস্তা রাখলে ভালো হতো।

এ ব্যাপারে দেলদুয়ার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, সীমানা নিয়ে দুপক্ষের বিরোধ চলছিল। উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সাথে থানা পুলিশ গিয়েছিল। তবে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফেরার পর তার মৃত্যু হয়েছে। এব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031