রাজধানীর বনানীতে হোটেল রেইনট্রিতে জন্মদিনের দাওয়াতে নিয়ে দুই তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় গণমাধ্যম যা খুশি তা প্রচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের স্ত্রী নীলুফার জেসমিন আহমদ। তাদের পরিবারের দিকে চেয়ে ‘অপপ্রচার’ না চালানোর অনুরোধ করেছেন তিনি।

গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপন জুয়েলার্সের ফেসবুক পেজে আপলোড করা এক ভিডিও বার্তায় এই কথা বলেন নীলুফার জেসমিন। এই ভিডিও বার্তাটি আবার টাকা খরচ করে স্পন্সর করে ছড়িয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গত ৬ মে বনানী থানায় সাফাত আহমদ ও তার চার সহযোগীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন এক তরুণী। সেখানে অভিযোগ করা হয় গত ২৮ মার্চ সাফাতের জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে অস্ত্রের মুখে দুই তরুণীতে ধর্ষণ করেন সাফাত ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ। এই ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন। সাফাতের দেহরক্ষী আবুল কালাম আযাদ বাড়িতে গিয়ে দুই তরুণীকে হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয় মামলায়। এই কাজে সহযোগী হিসেবে অন্য যে নামটি এসেছে, তিনি হলেন সাফাতের বন্ধু রেগনাম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফ।

ওই তরুণী মামলায় উল্লেখ করেন, ধারণ করা সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে দেয়ার অব্যাহত হুমকির মুখে তিনি মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

এই মামলার পাঁচ আসামিকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন এবং সম্প্রতি আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বাহিনীটি।

সাফাতের বাবা দিলদার আহমেদ সেলিম একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তার ছেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তরুণ বয়সে মানুষ একটু আধটু এমন করেই। তিনি এই বয়সেও এসব করেন।

এই বাস্তবতায় আপন জুয়েলার্সের ফেসবুক পেজে সাফায়াতের মায়ের ভিডিওটি প্রকাশ হয়। তিনি ওই ভিডিওতে বলেন, ‘আমি সাফায়াতের মা জেসমিন। আমার স্বামী দিলদার আহমেদ সেলিম। আমার দুটি ছেলে সাফাত এবং রিফাত। আমার সুখের সংসার বেশ ভালোই ছিল। হঠাৎ করে আমার বড় ছেলে সাফায়াত আমাদের না বলে গোপনে বিয়ে করে ফেলে। যা আমরা কেউ মেনে নিতে পারিনি। এই নিয়ে প্রায় আমার সংসারে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত। যা গণমাধ্যমের সংবাদে প্রচার করা হয়।’

সাফাতের মা বলেন, ‘আমরা কোন ভাষা নেই। আমি কি বলব জানি না। তবে আমার অনুরোধ এভাবে মানহানি করবেন না। আমার একটি ছোট ছেলে আছে। তার ভবিষ্যৎ আছে।’

গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি অভিযোগের সুরে সাফাতের বা বলেন, ‘সাংবাদিকরা যা ইচ্ছে তাই লিখছে এবং বলছে। আমার অনুরোধ এভাবে যেন অপপ্রচার না হয়।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031