খালেদা জিয়া বিএনপি চেয়ারপারসন  বলেছেন, ‘১০ বছর ধরে দেশে ভোট হয়নি, এবার হতে হবে। ভোটাররা যেন কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকেই সে ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার সেটি করবে না।’

 মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে জোটের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ইফতারে অংশ নিয়ে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘আজকে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকা খুব কঠিন। সরকার সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করেনি, করবেও না।’ তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) মনে করে তাদেরকে ক্ষমতায় থাকতে হবে, ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা কতগুলো কৌশল ঠিক করেছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য যাদেরকে হাতে রাখা দরকার তাদেরকে অবাধ সুযোগ দিচ্ছে, যে সাহায্য দরকার তা করে দিচ্ছে। কাজেই নির্বাচনে জেতা যাদেরকে দিয়ে সম্ভব, যারা তাদেরকে জিতিয়ে দিতে পারবে তাদের জন্য কাজ করলেই হবে। এখানে সাধারণ মানুষের ভোটের কোনো দাম নেই।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘আজকে সারাদেশেই দুর্ঘটনা ঘটছে। হাইওয়েগুলোর খারাপ অবস্থা হওয়ার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। এই সরকারের আমলে প্রতিনিয়ত মানুষ মরছে। মৃত্যুর মিছিল বেড়ে চলেছে। আর তারা বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আকাশে উড়ে, মাটির মানুষের কথা চিন্তাও করে না।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘এক পরিবার সব দখল করবে। শুধু তারা নিরাপত্তা পাবে।’ তিনি বলেন, ‘তারা উন্নয়নের কথা বলেন, কিন্তু রাস্তাঘাটের যে অবস্থা, তাতে কি বোঝা যায় উন্নয়ন হয়েছে? দেশের মানুষের কাছে উন্নয়ন পৌঁছেছে?’

সকলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সকল রাজনেতিক দল যাতে ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারে, সেজন্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আর সব মানুষ যেন কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা রাখতে হবে। আর সেজন্য প্রয়োজন নির্বাচনকালীন সরকার। যে সরকার নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারবে।’

খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে চায় না বলেই জনগণের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা নেই।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (সরকার) নিজেরা ভালো আছে। তারা রিলিফ চুরি করছে, লুটপাট করছে, ব্যাংকের টাকা নিচ্ছে। এবার বাজেটে যত রকমের কর বসিয়েছে, ভ্যাট বসিয়েছে এবং মুদির দোকানেও ভ্যাট বসিয়েছে। তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? ‘

ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম কী দেশের এই অবস্থা দেখতে। এক পরিবার সমস্ত কিছু দখল করে নেবে, কেউ গণভবন দখল করে নেবে, অমুক বাড়ি দখল করবে, তমুক করবে….। তাদের সব নিরাপত্তা দিতে হবে। শুধু তারাই নিরাপত্তা পাবে, সাধারণ মানুষের কোনো নিরাপত্তা নাই।’

পাহাড় ধসে নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করে খালেদা জিয়া আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থার দাবি জানান।

বিএনপি আমলে প্রথম ভ্যাট বসানোর কথা জানিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রথম যখন কর বসালাম তারা (আওয়ামী লীগ) আপত্তি করেছিল। সাইফুর রহমানকে গালাগাল করেছে। এখন তারা সবকিছুতে ভ্যাট বসাচ্ছে।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। জালেমদের থেকে মুক্তি চায়। সবার জন্য কাজ করতে পারে এমন সরকার দরকার।’

লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে ইফতারে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, শাহজাহান ওমর, মীর মো. নাসির, রুহুল খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নাল আবেদীন, রুহুল আলম চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তাবিথ আউয়াল, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্ অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ।

আরও উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার,&  জামায়াতের মাওলানা আবদুল হালিম, জাগপার রেহানা প্রধান, এনডিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মূর্তজা, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, বিজেপির আবদুল মতিন সউদ, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, খেলাফত মজলিশের শেখ গোলাম আজগর প্রমুখ। লেবার পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ফরিদউদ্দিন, ফারুক রহমান, এমদাদুল হক চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম রাজু, মাহবুবুর রহমান, শামসুদ্দিন পারভেজ, উম্মে হাবিবা রহমান, মহসিন ভুঁইয়া, আবদুর রাজ্জাক রাজু, আহসান হাবিব ইমরোজ, শামিমা চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, আমিনুল ইসলাম, এসএম ইউসুফ।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031